
জাদুঘরে কেন যাব- আনিসুজ্জামান
লেখক পরিচিতি :
নাম: আনিসুজ্জামান।
জন্মপরিচয় জন্মতারিখ : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৭
জন্মস্থান : কলকাতা
পিতৃ -মাতৃ পরিচয় পিতার নাম : ডা. এ.টি.এম. মোয়াজ্জেম
মাতার নাম : সৈয়দা খাতুন
শিক্ষাজীবন মাধ্যমিক : প্রবেশিকা, প্রিয়নাথ স্কুল, ঢাকা, ১৯৫১ সাল।
উচ্চ মাধ্যমিক : আইএ, জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা, ১৯৫৩ সাল।
উচ্চতর : বিএ(অনার্স), এম এ(বাংলা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিএইচ ডি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা : শিকাগো ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়।
কর্মজীবন/পেশা অধ্যাপক : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক।
সাহিত্যকর্ম গবেষণা ও প্রবন্ধ গ্রন্থ : ‘মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য’, ‘মুসলিম বাংলার সাময়িক পত্র’, ‘স্বরুপের সন্ধানে’, ‘আঠারো শতকের চিঠি;, ‘পুরানো বাংলা গদ্য’ ‘বাঙালি নারী : সাহিত্যে ও সমাজে’, ‘বাঙালি সংস্কৃতি ও অন্যান্য’ ‘ইহজাগতিকতা ও অন্যান্য’, ‘সংস্কৃতি ও সংস্কৃতি সাধক’, ‘চেনা মানুষের মুখ’ ইত্যাদি।
বিশেষ কৃতিত্ব উচ্চমানের গবেষণা ও সাবলীল গদ্য রচনার জন্য খ্যাতি অর্জন।
পদক ও পুরস্কার সাহিত্য ও গবেষণায় কৃতিত্বের জন্য তিনি ‘একুশে পদক’, ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ ‘আলাওল সাহিত্য পুরস্কার’ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি.লিট ও ভারত সরকার প্রদত্ত ‘পদ্মভূষণ’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
লেখক সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
তিনি দীর্ঘকাল চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করেছেন।
বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক।
তিনি উচ্চমানের গবেষণা ও সাবলীল গদ্য রচনার জন্যে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
উৎস পরিচিতি:
এই রচনাটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে শামসুল হোসাইনের সম্পাদনায় প্রকাশিত স্মারক পুস্তিকা ‘ঐতিহ্যায়ন’ (২০০৩) থেকে সংকলিত হয়েছে।
শব্দার্থ ও টীকা:
⇒ মিউজিয়াম স্টাডিজ – জাদুঘর বা প্রদর্শনশালা সংক্রান্ত বিদ্যা।
⇒ আলেকজান্দ্রিয়া – উত্তর মিসরের প্রধান সমুদ্রবন্দর ও সুপ্রাচীন নগর।
⇒ অবিদিত – জানা নেই এমন। অজানা। অজ্ঞাত।
⇒ ফরাসি বিপ্লব – ইউরোপের প্রথম বুর্জোয়া বিপ্লব।
⇒ টাওয়ার অব লন্ডন – লন্ডনের টেমস নদীর উত্তর তীরবর্তী রাজকীয় দুর্গ।
⇒ গোচরীভূত – অবগত। পরিজ্ঞাত।
⇒ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় – যুক্তরাজ্যের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়।
⇒ অ্যাশমল – ইংরেজ পুরাকীর্তি সংগ্রাহক।
⇒ অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম – ইংরেজ পুরাকীর্তি সংগ্রাহক অ্যাশমলের সংগ্রহ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘর।
⇒ ব্রিটিশ মিউজিয়াম – প্রত্নতত্ত্ব ও পুরাকীর্তি সংক্রান্ত এই জাদুঘর ব্রিটেনের জাতীয় জাদুঘর।
⇒ নৃতত্ত্ব – মানব জাতির উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
⇒ মৎস্যাধার – মাছ পালনের কাচের আধার।
⇒ হার্মিটেজ – সন্ন্যাসীর নির্জন আশ্রম।
জাদুঘরে কেন যাব সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ লাইন:
⇒ পাশ্চাত্যদেশে জাদুঘরতত্ত¡- মিউজিওলজি, মিউজিওগ্রাফি বা মিউজিয়াম স্টাডিজ একটা স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক বিষয় বা শৃঙ্খলা হিসেবে বিকশিত।
⇒ রাজ-রাজরা বা সামন্ত প্রভুরা যেসব সংগ্রহশালা গড়ে তুলেছেন, তাতে থাকতো ওইসব মহাশয়ের শক্তি, সম্পদ ও গৌরবের ঘোষণা।
⇒ ষোল শতকের আগে যৌথ কিংবা নাগরিক সংস্থার উদ্যোগে জাদুঘর নির্মাণের চেষ্টা হয়নি।
⇒ ফরাসি বিপ্লবের পরে প্রজাতন্ত্রই সৃষ্টি করে ল্যুভ, উন্মোচিত হয় ভার্সাই প্রাসাদের দ্বার।
⇒ রুশ বিপ্লবের পরে লেনিনগ্রাদের রাজপ্রাসাদে গড়ে ওঠে হার্মিতিয়ে।
⇒ টাওয়ার অফ লন্ডনে সকলে ভিড় করে কোহিনুর দেখতে।
⇒ জাতীয় জাদুঘর একটা জাতিসত্তার পরিচয় বহন করে।
⇒ চা খাওয়ার সময়ে আমাদের শিক্ষক প্রতিম অর্থমন্ত্রী ড. এম. এন. হুদা আমাকে ডাকলেন।
সারমর্ম:
জাদুঘর হচ্ছে এমন এক সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান যেখানে মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ ও ঐতিহাসিক নিদর্শন সংগ্রহ করে রাখা হয় সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও গবেষণার জন্য। অর্থাৎ জাদুঘর কেবল বর্তমান প্রজন্মের কাছে নিদর্শনগুলি প্রদর্শন করে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যেও সেগুলি সংরক্ষণ করে রাখে। সংগৃহীত নিদর্শনগুলিকে জাদুঘরে যথাযথভাবে পরিচিতিমূলক বিবরণসহ এমন আকর্ষণীয়ভাবে প্রদর্শন করা হয় যেন তা থেকে দর্শকরা অনেক কিছু জানতে পারেন, পাশাপাশি আনন্দও পান। এছাড়াও জাদুঘরে আয়োজন করা হয় বক্তৃতা, সেমিনার, চলচিত্র প্রদর্শন ইত্যাদির। পরিদর্শকদের মধ্যে জানার কৌতুহল বাড়িয়ে তোলাই এর উদ্দেশ্য। এভাবে জাদুঘর ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্যের সঙ্গে জনগণকে আকৃষ্ট ও সম্পৃক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পাঠ বিশ্লেষণ:
“এসবের সঙ্গে পরিচয় হয়ে আমরা অশেষ উল্লসিত হই।”
জাদুঘর আমাদের আনন্দ দেয়। সে আনন্দ আমরা লাভ করি মানুষের অনন্ত উদ্ভাবননৈপুণ্য, নিরলস সৃষ্টিক্ষমতা, সৌন্দর্যসাধনা এবং নিজেকে বারবার অতিক্রম করার প্রয়াস দেখে। জাদুঘরে সংরক্ষিত এসব মনোমুগ্ধকর নিদর্শন দেখে আমরা আনন্দে উল্লসিত হই।
“জাদুঘর শুধু জ্ঞানই ছড়িয়ে দেয় না, অলক্ষ্যে ছড়িয়ে দেয় ভাবাদর্শ।”
জাদুঘর একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। জাদুঘর সমাজের এক স্তরের সঞ্চিত জ্ঞান অন্য স্তরে ছড়িয়ে দেয়। জনসমাজের সাধারণ স্তরে সেই জ্ঞান বিস্তার লাভ করে। বিভিন্ন যুগের অর্জিত জ্ঞান এভাবে সঞ্চারিত হয় প্রজন্ম থেকে প্রজমান্তরে। আবার জাতীয় জীবনের ভাবাদর্শও জাদুঘরের মাধ্যমে ছড়িয়ে প্রজন্মান্তরে।
“জাতীয় জাদুঘর একটা জাতিসত্তার পরিচয় বহন করে।”
জাতীয় জাদুঘর কেবল একটা জাতিসত্তার পরিচয়ের প্রতীক। সেখানে প্রাচীণকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত নানা ঐতিহাসিক, নৃতাত্তি¡ক, প্রতœতাত্তি¡ক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈকি নিদর্শন সংরক্ষিত থাকে। যা দেখে জাতি তার স্বরূপ উপলদ্ধি করে, সংস্কৃতির পরিচয় লাভ করে এবং আত্মবিকাশের প্রেরণা লাভ করে। একসময় এসব বস্তু ও নিদর্শন ব্যক্তি বা পরিবারের কুক্ষিগত থাকলেও তার এখন গোটা জাতির সম্পদ।
“এত দেশে এত কালে মানুষ যা কিছু করেছে, তার সবকিছুর মধ্যে আমি আছি।”
ব্রিটিশ মিউজিয়ামে নানা দেশের নানা নিদর্শন সংগৃহীত হয়েছে। সাম্রাজ্য ও দীর্ঘকাল শাসন করতে গিয়ে তারা নানা দেশ থেকে এসব সংগ্রহ করেছে। লেখকের বিশ্বাস, এত দেশে এত কালে মানুষ যা কিছু করছে তার সবকিছুর মধ্যে বাংলারও অন্যতম ভূমিকা আছে।
“অন্যের ঐতিহ্যিক উত্তরাধিকার হরণ করে এনেও সা¤্রাজ্যবাদী শক্তি নিজেদের জাদুঘর সাজাতে কুন্ঠিত বোধ করে না।”
টাওয়ার অব লÐনে প্রদর্শনের জন্য রাখা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও মূল্যবান হীরা ‘কোহিনূর’ এর মূল মালিক ভারত। কারণ এটি ভারতেই আবিস্কৃত হয়েছে। কিন্তু সা¤্রাজ্যবাদী শক্তি এই ঐতিহ্যিক উত্তরাধিকার হরণ করে নিজেদের জাদুঘর সাজিয়েছে। এতে তাদের কিছুমাত্র কুণ্ঠা নেই।
“গড়পড়তা মানুষ তা দেখতে যায়, দেখে আপ্ল ুত হয়।”
জাদুঘর সবাই দেখতে যায় না। যারা দেখতে যায় তারা তা দেখে আপ্লুত হয়। কারণ তাতে চমকে দেওয়ার মতো অনন্য সব নিদর্শন ও সামগ্রী থাকে। যা লুপ্ত হয়েছে বা হয়ে যাচ্ছে এমন সব বস্তু, আর যা বিস্ময়ের উদ্রেক করে এমন সব জিনিসের সমাবেশ থাকে জাদুঘরে। ফলে তা দেখে আপ্লুত হয় মানুষ।
“জাদুঘরের বৈচিত্র্য আজ খুবই চোখে পড়ে।”
দেশ বিদেশে সর্বত্র নানা ধরনের জাদুঘর গড়ে তোলা হচ্ছে। এ বৈচিত্র্য একদিকে যেমন সংগ্রহের বিষয়গত, তেমনি গঠনগত এবং অন্যদিকে প্রশাসনগত। ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের জাদুঘরের মধ্যে রয়েছে প্রতœরত্ত¡, ইতিহাস, নৃতত্ত¡, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইত্যাদি। প্রশাসনগত জাদুঘরের মধ্যে রয়েছে জাতীয় জাদুঘর, বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর ইত্যাদি।
“ফরাসি বিপ্লবের পরে প্রজাতন্ত্রই সৃষ্টি করে ল্যুভ”।
১৭৮৯ সালে ১৪ জুলাই ফরাসি জনগণ সেখানকার কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গ ও কারাগার দখল করে সমস্ত বন্দিকে মুক্তি দেয়। বিপ্লবের মূলবাণীর ভিত্তিতে সামন্তবাদের পতন হয়। ফরাসি প্রজাতন্ত্রই সৃষ্টি করে ল্যুভ। ল্যুভ ফ্রান্সের জাতীয় জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি। জাদুঘর হিসেবে ল্যুভ পৃথিবীখ্যাত।
“কালক্রমে প্রাচীণ জিনিসপত্র সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ছিল।”
ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে প্রাচীণ নির্দশন ও জিনিসপত্র সম্পর্কে আগ্রহ ও আকর্ষণ সৃষ্টি হচ্ছিল। সম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিবারের উদ্যোগে সেসব সংগৃহীত হচ্ছিল। আর এভাবেই জাদুঘর গড়ার ভিত্তি রচনার সূত্রপাত।
গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (জ্ঞানমূলক):
১। পাশ্চাত্যদেশে একটা স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক বিষয় বা শৃঙ্খলা হিসেবে বিকশিত – জাদুঘরতত্ত¡।
২। ‘পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর ছিল মুখ্যত দর্শন চর্চার কেন্দ্র’- এ থেকে আমাদের মনে ধারণা জন্মে-২টি (প্রথমত-জাদুঘর গড়ে উঠেছিল প্রতিষ্ঠাতার রুচিমাফিক; দ্বিতীয়ত-দর্শকেরা সেখানে যেতেন নিজের অভিপ্রায় অনুযায়ী বিশেষ বিশেষ অংশে)।
৩। কালক্রমে আগ্রহ বাড়ছিল – প্রাচীন জিনিসপত্র সম্পর্কে।
৪। জাদুঘর গড়ার ভিত্তি রচনা হয়েছিল- সম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিবারের উদ্যোগে প্রাচীন জিনিসপত্র সংগৃহীত হয়ে।
৫। ‘প্রাচ্যদেশেও এমন সংগ্রহের কথা অবিদিত ছিল না’- এখানে বোঝানো হয়েছে – প্রাচীন জিনিসপত্র সংগ্রহের কথা।
৬। পাশ্চাত্য দেশে প্রাচীন জিনিসপত্র সংগ্রহের প্রয়াস অনেক বৃদ্ধি পায়-ইউরোপীয় রেনেসাঁদের পর।
৭। ইউরোপে শিল্প সাহিত্য, জ্ঞানচর্চা ও চিন্তা চেতনার ক্ষেত্রে নবজাগরণের মাধ্যমে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে উত্তরণই হচ্ছে-ইউরোপীয় রেনেসাঁস।
৮। ইউরোপীয় রেনেসাঁসের সময়সীমা- খ্রিস্টীয় চৌদ্দ থেকে ষোল শতক ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সকলের জন্য খোলা থাকতো না’- এখানে বোঝানো হয়েছে- ব্যক্তিগত বা পারিবারিক জাদুঘরের কথা।
৯। ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সকলের জন্য খোলা থাকতো না’- এখানে বোঝানো হয়েছে – ব্যক্তিগত বা পারিবারিক জাদুঘরের কথা।
১০। রুশ বিপ্লব সংঘটিত হয় – বিপ্লবী নেতা লেলিনের নেতৃত্বে।
১১। রুশ বিপ্লবে পতন হয় – জারতন্ত্রের।
১২। রুশ বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে – সর্বহারার দল বলশেভিক পার্টি।
১৩। ‘তা বিপ্লবের না হলেও ক্রমবর্ধমান গণতন্ত্রায়নের ফলে’- এখানে বোঝানো হয়েছে – টাওয়ার অফ লন্ডনের কথা।
১৪। কখনও কখনও ব্যক্তিগত সংগ্রহের দায়িত্বভার গ্রহণ করে তা সকলের গোচরীভূত করার ব্যবস্থা করে- রাষ্ট্র।
১৫। ব্রিটেনের প্রথম পাবলিক মিউজিয়ামের নাম – অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম যা গড়ে ওঠে সতেরো শতকে (অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে)।
১৬। অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়ামের সৃষ্টি হয়- ৩ জনের সংগ্রহ দিয়ে (পিতাপুত্র দুই ট্রাডেসান্ট এবং অ্যাশমোল)।
১৭। যুক্তরাজ্যের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়-অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
১৮। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়-বারো শতকের প্রথম দিকে।
১৯। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান- অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম (শিল্পকলা ও প্রতœতত্ত¡ সংক্রান্ত জাদুঘর)।
২০। জাদুঘর স্থাপনার কাজটি দ্রুত এগিয়ে যায়- বিশ শতকের দিকে।
২১। আত্মপরিচয় দানের প্রেরণায় নতুন নতুন জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় প্রবৃত্ত হয়- সদ্য স্বাধীন দেশগুলোও।
২২। বর্তমানে জাদুঘর নির্মাণে যে প্রবণতা দেখা যায় – প্রাকৃতিক জগতের নিদর্শন থেকে মানবসৃষ্ট নির্দশন আলাদা করে রাখা।
২৩। লেখকের মতে একালে আলেকজান্দ্রিয়ার মতো মেলানো মেশানো জাদুঘরের সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত – ব্রিটিশ মিউজিয়াম।
২৪। ‘সেখানে বৃহৎ প্রত্নতাত্তিক ও ঐতিহাসিক সংগ্রহশালার সঙ্গে রয়েছে- বিশাল গ্রন্থাগার, স্বতন্ত্রভাবে রয়েছে উদ্ভিদবিজ্ঞান ও জীববিদ্যার জাদুঘর’- এ বাক্যে ‘সেখানে’ বলতে বোঝানো হয়েছে- ব্রিটিশ মিউজিয়ামকে।
২৫। গত ত্রিশ বছরে জাদুঘরের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে- ব্রিটেনে।
২৬। বর্তমানে জাদুঘরের যে বৈচিত্র্যগুলো চোখে পড়ে তা হচ্ছে – সংগ্রহের বিষয়গত, গঠনগত এবং প্রশাসনগত।
২৭। Archaeology শব্দের অর্থ – প্রত্নতত্ত্ব।
২৮। Anthropology- শব্দের অর্থ – নৃতত্ত্ব।
২৯। Architecture – শব্দের অর্থ – স্থাপত্য।
৩০। Sculpture শব্দের অর্থ – ভাস্কর্য।
৩১। প্রত্নতত্ত্ব হচ্ছে – প্রাচীন মুদ্রা ও পুরাকীর্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৩২। নৃতত্ত্ব হচ্ছে – মানবজাতির উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৩৩। ফ্রান্সের জাতীয় জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারির নাম-Louvre Museum
৩৪। Louvre Museum প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৫৪৬ খ্রিস্টাব্দে, প্যারিসে।
৩৫। বিশ্বের অন্যতম চিত্রশিল্পের সংগ্রহশালা হিসেবে বিবেচিত- ফ্রান্সের Louvre Museum.
৩৬। আমাদের জাতীয় জাদুঘরের ১ম ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন- তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর আব্দুল মোনায়েম খান।
৩৭। আমাদের জাতীয় জাদুঘরের ১ম ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন শিক্ষামন্ত্রী তার ভাষণ পড়তে গিয়ে মুদ্রিত ‘জাদুঘর’ শব্দের জায়গায় সর্বত্র পড়ছিলেন- মিউজিয়াম শব্দটি।
৩৮। ‘গভর্নর সাহেবের একটা প্রশ্ন আছে, উত্তর দাও’- উক্তিটি -তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ড.এম.এন হুদার।
৩৯। ‘মিউজিয়ামে যে আলাহর কালাম রাখা আছে, তা কি জাদুু’- গভর্নর উক্তিটি করেছিলেন- রাগতস্বরে।
৪০। গভর্নর আলাহর কালাম বলতে বুঝিয়েছিলেন- চমৎকার তুঘরা হরফে লেখা নুসরাত শাহের আশরাফপুর শিলালিপিকে।
৪১। নুসরাত শাহের আশরাফপুর শিলালিপিটি ছিল – ষোল শতকে এক মসজিদ প্রতিষ্ঠার বৃত্তান্ত সংবলিত প্রস্তরখন্ড।
৪২। ‘না জাদুঘর বলা চলবে না, মিউজিয়াম বলতে হবে?’-গভর্নর উক্তিটি করেছিলেন- হুংকার দিয়ে।
৪৩। গভর্নরের সামনে থেকে চলে আসার পর লেখকের মনে হয়েছিল যে – জাদু শব্দটি ফারসি।
৪৪। উর্দুতে জাদুঘরকে বলে – আজবখানা।
৪৫। গভর্নর ‘জাদুঘর’ শব্দটির পরিবর্তে মিউজিয়াম শব্দটি বাংলায় ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন- মুসলমানদের স্বতন্ত্র প্রয়োগ হিসেবে।
৪৬। জাদুঘরকে আত্মপরিচয় লাভের ক্ষেত্র হিসেবে দেখেছিলেন -তৎকালীন গভর্নর আব্দুল মোনায়েম খান।
৪৭। বাংলা স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের প্রাচীন নিদর্শনের সঙ্গে লেখকের প্রথম পরিচয় ঘটে তখন- যখন লেখক অল্প বয়সে প্রথম ঢাকা জাদুঘরে গিয়েছিলেন।
৪৮। লেখক জাদুঘরে গিয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন – ঈশা খাঁর কামানের গায়ে বাংলা লেখা দেখে।
৪৯। লেখক যখন অল্প বয়সে প্রথম ঢাকা জাদুঘরে গিয়েছিলেন তখন জাদুঘরের বাইরে রক্ষিত ছিল- নীল জ্বাল দেওয়ার মস্ত বড় কড়াই।
৫০। ‘কিন্তু তার সঙ্গে যে অনেক দীর্ঘশ্বাস ও অশ্রæবিন্দু জড়িত, সেটা মনে পড়তে ভুল হয়নি’ – এখানে তার সঙ্গে বলতে বোঝানো হয়েছে – নীল জ্বাল দেওয়ার মস্ত বড় কড়াইয়ের কথা।
৫১। লেখক ঢাকা জাদুঘর ঘুরে বাঙালির যে আত্মপরিচয় লাভ করেছিল তা শক্তিশালী হয়েছিল – কলকাতা জাদুঘর ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দেখে।
৫২। কলকাতা জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৮১৪ সালে (এটি ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন জাদুঘর)।
৫৩। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হচ্ছে – কলকাতা ময়দানের দক্ষিণ কোণে অবস্থিত শ্বেতপাথরে নির্মিত রাণী ভিক্টোরিয়ায় নামাঙ্কিত স্মৃতিসৌধ।
৫৪। গ্রেকো রোমান মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয়- ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে।
৫৫। কায়রো মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে।
৫৬। কায়রো মিউজিয়াম প্রদর্শন সামগ্রী আছে – প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার।
৫৭। ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারীদের প্রথম আগমনকারী স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষিত আছে- সিয়াটলে ও নর্থ ক্যারোলাইনার পূর্ব প্রান্তে।
৫৮। ইংল্যান্ডের ইতিহাসের অনেকখানি ধরে আছে – ব্রিটিশ মিউজিয়াম ও টাওয়ার অফ লন্ডনে।
৫৯। ‘অন্যের ঐতিহ্যিক উত্তরাধিকার হরণ করে এনেও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি নিজেদের জাদুঘর সাজাতে কুণ্ঠা বোধ করে না’- লেখক এটা ভেবেছিলেন-কোহিনূর দেখার সময়।
৬০। টাওয়ার অফ লন্ডনে সকলে ভিড় করে- কোহিনূর দেখতে।
৬১। লেখক ব্রিটিশ ভারতীয় মুদ্রার সযতন স্থান দেখে চমৎকৃত হয়েছেন – কুয়েতের জাদুঘরে।
৬২। জাদুঘরের একটা প্রধান কাজ হল – সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণ এবং জাতিকে আত্মপরিচয় দানের সূত্র জানানো।
৬৩। একটা জাতিসত্ত্বার পরিচয় বহন করে – জাতীয় জাদুঘর
৬৪। ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংগৃহীত নানা দেশের নানা নির্দেশনা দেখে সন্ধান পাওয়া যায়-অভিন্ন মানবসত্ত্বার।
৬৫। জাদুঘর একটা শক্তিশালী – সামাজিক সংগঠন।
৬৬। জাদুঘর শুধু জ্ঞানই ছড়িয়ে দেয় না, অলক্ষ্যে ছড়িয়ে দেয় – ভাবাদর্শ।
৬৭। ‘কে বলেছে আপনাকে যেতে?’ – লেখকের এই উক্তিটির মধ্যে নিহিত আছে- কৌতুক।
৬৮। এই রচনাটি সংকলিত হয়েছে – স্মারক পুস্তিকা ঐতিহ্যায়ন থেকে।
৬৯। স্মারক পুস্তিকা ঐতিহ্যায়ন প্রকাশিত হয়- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে (শামসুল হোসাইনের সম্পাদনায়)।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর:
১। জাদুঘর গড়ার ভিত্তি রচিত হয়েছিল কীভাবে?
উত্তর : প্রাচীণ জিনিসপত্র সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ এবং সেসব সংগ্রহের উদ্যোগ জাদুঘর গড়ার ভিত্তি রচনা করেছিল। জাদুঘর সভ্যতা ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর ছিল মুখ্যত দর্শনচর্চার কেন্দ্র। কিন্তু কালক্রমে প্রাচীণ জিনিসপত্র সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বাড়ে। ঐতিহ্য সচেতন মানুষ সেসব সংগ্রহের গ্রহণ করে। আর এভাবেই ধীরে ধীরে জাদুঘর পড়ার ভিত্তি রচিত হয়।
২।পাশ্চাত্যদেশে মিউজিয়াম স্টাডিজকে একটা স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক শৃঙ্খলা বলা হয় কেন?
উত্তর : গুরুত্বের বিচারে জাদুঘরতত্ত¡ বা মিউজিয়াম স্টাডিজকে পাশ্চাত্যদেশে একটা স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক শৃঙ্খল বলা হয়। মিউজিয়াম স্টাডিজ বা জাদুঘরতত্ত¡ হচ্ছে জাদুঘর বা প্রদর্শনশালা সংক্রান্ত বিদ্যা। ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে যেমন: জাদুঘরের গুরুত্ব অপরিসীম, তেমনি সেই জাদুঘর সম্পর্কে জ্ঞান লাভে মিউজিয়াম স্টাডিজ বা জাদুঘরতত্ত¡ বিশেষ ভূমিকা পালনকারী বিদ্যা হিসেবে স্বীকৃত। তাই পাশ্চাত্যদেশে মিউজিয়াম স্টাডিজ বা জাদুঘরতত্ত¡কে একটা স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক শৃঙ্খলা বলা হয়।
৩। ‘জাদুঘর আমাদের আনন্দ দেয়’- বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : জাদুঘরের নিদর্শনসমূহে চমকপ্রদ, লুপ্ত প্রায় ও বিস্ময়কর যা দেখে আমরা মুগ্ধ এবং আনন্দিত হই। জাদুঘরে সংরক্ষিত জিনিসগুলো আর কোথাও পাওয়া যায় না, দেখা যায় না। এগুলো দেখার পাশাপাশি মানুষ এর অতীত সম্পর্কে জানতে পারে, জানতে পারে অনেক চমকপ্রদ উপাখ্যান। যা মানুষকে শুধু চমকিত করে না বরং আনন্দও দেয়। মানুষের অনন্ত উদ্ভাবন দক্ষতা, তার নিরলস সৃজনশীলতা, সৌন্দর্যসাধনা এবং নিজেকে অতিক্রমের প্রয়াস আমাদের উল্লসিতও করে।
৪। মিউজিয়াম স্টাডিজকে একটি স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক শৃঙ্খলা বলা হয় কেন?
উত্তর : প্রতœতাত্তি¡ক ও ঐতিহাসিক সংগ্রহশালাসহ নানা বিষয় মিউজিয়মে প্রদর্শন করা হয় বলে মিউজিয়ম স্টাডিজকে একটি স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক শৃঙ্খলা বলা হয়। জাদুঘরে মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির নানা নিদর্শন সংগ্রহ করে রাখা হয় সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও গবেষণার জন্যে। জাদুঘর এসব নিদর্শন বর্তমান প্রজন্মের কাছে প্রদর্শন করে আবার ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যেও সংরক্ষণ করে। এখানে জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা সম্পর্কে তথ্য নিদর্শন উপস্থাপন করা হয়। মিউজিয়াম স্টাডিজকে জ্ঞান বিজ্ঞানের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয় বলে একে একটি স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক শৃঙ্খলা বলা হয়।
৫। ‘চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে’- প্রসঙ্গ উল্লেখপূর্বক ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : জাতীয় জাদুঘরের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে ‘জাদুঘর’ শব্দটি ব্যবহারের যথার্থ যুক্তি না দিতে পারায় লেখক এ কথাটি বলেছিলেন। লেখক অনুষ্ঠান শেষে ‘জাদুঘর’ শব্দটি ব্যবহারের আরও শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য অর্থ খুঁজে বের করেছিলেন। যা হয়তো গর্ভনর সাহেব মেনে নিতেও পারতেন। কেননা জাদু শব্দটি ফারসি শব্দ, আর ঘর শব্দটি বাংলা। কিন্তু সময়মতো এসব যুক্তি মাথায় আসেনি বলে লেখক বাংলা প্রবাদ ‘চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে’ উচ্চারণ করেছেন।
৬। ‘জাদু ও আজব শব্দের দ্যোতনা আছে দু’রকম’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ‘জাদু’ ‘ফরাসি’ ও ‘আজব’ আরবি শব্দ। শব্দ দুটির মধ্যে অর্থগত মিল ছাড়াও ভাবগত একটি দোলা লেখক খুঁজে পেয়েছেন। জাদুঘর শব্দ ব্যবহারে প্রধান অতিথির প্রতিরোধের মুখে যখন লেখক মোক্ষম যুক্তি খুঁজছেন, তখন তিনি দেখতে পেলেন ফারসি ও আরবি শব্দ দুটির মধ্যে শুধু অর্থগতই নয়, ভাবগত একটি মিল আছে, যা দ্যোতনা সৃষ্টি করে বলে মনে হয়েছে। জাদু ও আজব শব্দদ্বয় কুহক, ইন্দ্রজাল, ভেলকি, অন্যদিকে চমৎকার, মনোহর, কৌতূহলোদ্দীপক।
৭। পৃথিবীর বহু জাদুঘরে নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখার প্রয়াস পরিলক্ষিত হয় কেন?
উত্তর : পৃথিবীর বহু জাদুঘরে নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখার প্রয়াস পরিলক্ষিত হয় আত্মপরিচয় প্রদানের জন্যে। কোন জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সে জাতির পরিচয়কে তুলে ধরে। কালের বিবর্তনে প্রতিটি জাতিতে নানা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সে জাতির পরিচয়কে তুলে ধরে। কালের বিবর্তনে প্রতিটি জাতিতে নানা সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আসে। জাদুঘরে এসব স্থান পায় বলে এখানে কোন জাতি তার অতীত পরিচয়ের সন্ধান পায়। সুতরাং, আত্মপরিচয় প্রদানের জন্যেই কোন জাতির মাঝে জাদুঘরে নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখার প্রয়াস পরিলক্ষিত হয়।
৮। বিভিন্ন শ্রেণির জাদুঘর গড়ে ওঠার কারণ কী?
উত্তর : যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের জাদুঘর গড়ে তোলার ”েষ্টা প্রবল হয়ে দেখা দিয়েছে। এ কারণে বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণির জাদুঘর গড়ে উঠেছে। বিবর্তনের ইতিহাসের প্রথম পর্ব থেকে বিশাল বিশাল প্রাসাদে ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ক জাদুঘর গড়ে তোলা হতো। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে যে ধরনের জাদুঘর এখন কম নির্মিত হয়। তার বিপরীতে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে জাদুঘর এখন কর্ম নির্মিত হয়। তার বিপরীতে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে জাদুঘর গড়ে তোলার চেষ্টা প্রবল হয়ে উঠেছে। ফলে দেখা যায় জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিষয়ক জাদুঘর গড়ে তোলা হচ্ছে। আর এ কারণেই বিভিন্ন শ্রেণির জাদুঘর গড়ে উঠছে।
৯। ব্যক্তিগত জাদুঘর সব সময় সবার জন্য উন্মুক্ত থাকত না কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ব্যক্তিগত জাদুঘরে একজন ব্যক্তির নিজস্ব আগ্রহের জিনিসপত্রের সমারোহ হতো বলে তা সবার জন্যে উন্মুক্ত থাকত না। প্রাতিষ্ঠানিক জাদুঘর সৃষ্টির পূর্বে সম্পদ বা সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা তাঁদের নিজস্ব আগ্রহের জিনিসপত্র একটি কক্ষে সংরক্ষণ করে রাখতেন। একান্ত ব্যক্তিগত জিনিসপত্রের সংরক্ষণ থাকত বলে অনেক সময় এরকম জাদুঘরে সামান্য প্রবেশমূল্য দিয়ে ঢোকা গেলেও অধিকাংশ সময়েই তা সকলের জন্যে উন্মুক্ত থাকত না।
১০। জাদুঘরের সাধারণ লক্ষণ কেমন হয়ে থাকে?
উত্তর : জাদুঘরের একটা সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে, যা চমকপ্রদ, অনন্য, লুপ্তপ্রায়, বিস্ময় উদ্রেককারী তা সংগ্রহ করা। জাদুঘর হলো নিদর্শন সংগ্রহশালা। এখানে আগে বইয়ের সংগ্রহ, উদ্ভিদ উদ্যান ও উন্মুক্ত চিড়িয়াখানাও ছিল। বর্তমানে জাদুঘর কতগুলো সাধারণ বৈশিষ্ট্য নিয়ে গড়ে উঠেছে। এখানে একটি দেশের পূর্বসূরিদের শৌর্য-বীর্য, শাসন, রাজনীতি, ধর্ম-কর্ম, পুরাকীর্তি ইত্যাদি স্মৃতিবিজড়িত বস্তুগুলো জড়ো করা হয়, যা দেশে মানুষ বিস্মিত হয় এবং নিজেদের জাতিসত্তা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে।
উদ্দীপকের বিষয় :
বাংলার প্রাচীণ মৃৎশিল্প।
বাংলা ও বাঙালি জাতির আদিকথা।
জাদুঘর জ্ঞানের ভাÐারস্বরূপ।
ব্যক্তিগত সংগ্রহ জাদুঘর স্থাপনের প্রাথমিক অবস্থা।
জাদুঘর স্থাপনের উদ্যোগ।
ব্রিটিশ জাদুঘরের বিশালত্ব ও পরিধি।
জাদুঘরে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য দর্শনে আত্মপরিচয় লাভ।
চেতনার বিকাশ সাধনে জাদুঘরের গুরুত্ব।
জাতির ঐতিহ্য রক্ষায় জাদুঘরের ভূমিকা।
ক্রমবিকাশ ধারায় জাদুঘরের বর্তমান রূপ।
অতীত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভের উপায়।
বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর।
জাদুঘরের ইতিহাসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা।
জাদুঘরে আমাদের যাওয়া উচিত কেন সে সম্পর্কে ধারণা।
স্থানের নাম :
আলেকজান্দ্রিয়া, ইউরোপ, ভার্সাই, লেলিনগ্রাদ, লন্ডন, ব্রিটেন, বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম, ঢাকা রাজশাহী, পাকিস্তান, কায়রো, মিশর, সিয়াটল, নর্থ-ক্যারোলাইন, আমেরিকা, কুয়েত, ইংল্যান্ড, ভারত, ল্যুভ।
ব্যাকরণ অভীক্ষা:
⇒ উপসর্গ সাধিত শব্দ।
নিদর্শন, অভিপ্রায়, আগ্রহ, অবিদিত, বিকাশ, বিশেষ, অস্থায়ী, বিজ্ঞান, ইতিহাস, পরিবহন, পরিবেশ, বিভাগ, প্রশাসন, প্রসঙ্গ, আকর্ষণ, অভিন্ন, নিরলস, অতিক্রম, অশেষ, পরিশেষ।
⇒ বিদেশি শব্দ (ইংরেজি) :
মিউজিওলজি, মিউজিওগ্রাফি, মিউজিয়াম স্ট্যাডিজ, পাবলিক, ড়ীভড়ৎফ, গার্ডেন, সাইট, গর্ভনর, স্যার, চ্যান্সেলর, মেমোরিয়াল।
আল্লাহ (আরবি), জাদু (হিন্দি অথাব ফারসি), হরফ (আরবি), খানা (ফার্সি), আজব (আরবি), যাদুঘর (ফার্সি)।
⇒ সন্ধি সাধিত শব্দ:
বিদ্যায়তনিক = বিদ্যা+আয়তনিক স্বাধীন = স্ব+অধীন]
অভ্যাগত = অভি+আগত
ব্যবস্থা = বি+অবস্থা
মস্যাধার = মসী+আধার
মনোজগৎ = মনঃ+জগৎ
⇒ সমাস সাধিত শব্দ:
প্রদত্ত শব্দ ব্যাসবাক্য সমাসের নাম
ছোট বড় ছোট ও বড় দ্ব›দ্ব
মহাকাশ মহৎ যে আকাশ কর্মধারয়
বঙ্গবন্ধু বঙ্গের বন্ধু ৬ষ্ঠী তৎপুরুষ
প্রথম ও শেষ লাইন:
⇒ প্রথম লাইন: পাশ্চাত্যদেশে জাদুঘরতত্ত¡Ñমিউজিওলজি, মিউজিওগ্রাফি বা মিউজিয়াম স্টাডিজÑএকটা স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক বিষয় বা শৃঙ্খলা হিসেবে বিকশিত।
⇒ শেষ লাইন: এতকিছুর পরেও যদি কেউ প্রশ্ন করেন, “জাদুঘরে কেন যাবে?” কৌতুক সঞ্চার করে প্রাবন্ধিক পরিশেষে লিখেছেন যে, তাহলে তার একমাত্র উত্তর বোধ হয় এই: ‘কে বলেছে আপনাকে যেতে?’
নং | বিষয় | লেখক |
১ | আমার পথ | কাজী নজরুল ইসলাম |
২ | বিড়াল | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
৩ | চাষার দুক্ষু | বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত |
৪ | সাম্যবাদী | কাজী নজরুল ইসলাম |
৫ | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
৬ | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | মাইকেল মধূসুদন দত্ত |
৭ | বায়ান্নর দিনগুলো | শেখ মুজিবুর রহমান |
৮ | অপরিচিতা | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
৯ | মাসি-পিসি | মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় |
১০ | জীবন ও বৃক্ষ | মোতাহের হোসেন চৌধুরী |
১১ | আমি কিংবদন্তির কথা বলছি | আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ |
১২ | নেকলেস | গী দ্য মোপাসাঁ/ পূর্ণেন্দু দস্তিদার |
১৩ | রেইনকোট | আখতারুজ্জামান ইলিয়াস |
১৪ | নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় | সৈয়দ শামসুল হক |
১৫ | তাহারেই পড়ে মনে | সুফিয়া কামাল |
১৬ | ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ | শামসুর রাহমান |
১৭ | রক্তে আমার অনাদি অস্থি | দিলওয়ার খান |
১৮ | সেই অস্ত্র | আহসান হাবিব |