নেকলেস -গী দ্য মোপাসাঁ
লেখক পরিচিতি :
- নাম সংক্ষিপ্ত নাম : গী দ্য মোপাসাঁ।
- পূর্ণনাম : Henri-Renri-Albert-Guy de Maupassant
- জন্মপরিচয় জন্মতারিখ : ৫ আগস্ট, ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দ।
- জন্মস্থান : নর্মান্ডি, ফ্রান্স।
- বংশ পরিচয় পিতার নাম : গুস্তাভ দ্য মোপাসাঁ
- মাতার নাম : লরা লি পয়টিভিন
- শিক্ষাজীবন : নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল, ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দ।
- সাহিত্য অভিভাবক পারিবারিক বন্ধু ঔপন্যাসিক গুস্তাভ ফ্লবেয়ার।
- পেশা ও কর্মজীবন সাংবাদিকতা ও সাহিত্যচর্চা। কাব্যচর্চা দিয়ে শুরু, গল্পকার হিসেবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন। তাঁর বস্তুনিষ্ঠা ও নিরপেক্ষতার তুলনা বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে বিরল। অসাধারণ সংযম ও বিস্ময়কর জীবনবোধে তাঁর রচনা তাৎপর্যপূর্ণ।
- মৃত্যুবরণ ৬ জুলাই, ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দ।
অনুবাদক পরিচিতি :
- নাম : পূর্ণেন্দু দস্তিদার।
- জন্মপরিচয় জন্মতারিখ : ২০ জুন, ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দ।
- জন্মস্থান : ধলঘাট, পটিয়া, চট্টগ্রাম।
- বংশ পরিচয় পিতার নাম : চন্দ্রকুমার দস্তিদার।
- মাতার নাম : কুমুদিনী দস্তিদার।
- পেশা ও কর্মজীবন আইনজীবী, লেখক ও রাজনীতিবিদ।
- বিশেষ কর্ম মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে পরিচালিত চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহে অংশগ্রহণ ও কারাবরণ।
- প্রকাশিত গ্রন্থ ‘কবিয়াল রমেশ শীল’ ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রাম’ ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা।’ অনুবাদ : ‘শেখভের গল্প’ ‘মোপাসাঁর গল্প’।
- মৃত্যুবরণ ৯ মে, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ। (মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে ভারতে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।)
লেখক সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্ব্পূর্ণ তথ্য
- পারিবারিক বন্ধু গুস্তাভ ফ্লবেয়ার মোপাসাঁর সাহিত্য জীবনে অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
- ফ্লবেয়ারের বাসায় মোপাসাঁর পরিচয় ঘটে এমিড জেভলা ও ইভান তুর্গনেভসহ অনেক বিশ্ববিখ্যাত লেখকের সঙ্গে।
- অসাধারণ সংযম ও বিস্ময়কর জীবনবোধ তাঁর রচনাকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে।
অনুবাদক পরিচিতি
পূর্ণেন্দু দস্তিদার চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ এ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে লেখক ও রাজনীতিবিদ। তার পিতা চন্দ্রকুমার দস্তিদার ও মাতা কুমুদিনী দস্তিদার। তিনি মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে পরিচালিত চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহে অংশ নেওয়ায় কারাবরণ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন আইনজীবী, সমাজভাবুক লেখক হিসেবেও খ্যাতি ছিল তাঁর। তিনি ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ৯ই মে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে ভারতে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।
- পূর্ণেন্দু দস্তিদার চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ২০ এ জুন জন্মগ্রহণ করেন।
- তিনি ছিলেন একধারে লেখক ও রাজনীতিবিদ। তাঁর পিতা চন্দ্রকুমার দস্তিদার ও মাতা কুমুদিনি দস্তিদার।
- তিনি মাষ্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে পরিচালিত চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহে অংশ নেওয়ায় কারাবরণ করেন।
- পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন আইনজীবী ; সমাজ ভাবুক লেখক হিসেবেও খ্যাতি ছিল তাঁর।
- তিনি ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ৯ই মে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে ভারতে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর রচনা :
প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ; ‘কবিয়াল রমেশ শীল’, স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রাম’, বীরকন্যা প্রীতিলতা’। এছাড়াও তার অনুবাদ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘শেখভের গল্প’ ও ‘মোপাসাঁর গল্প’।
মূলকথা/মর্মবাণী/উপজীব্য বিষয় : ভাগ্যের বিরম্বনা।
শব্দার্থ ও টীকা
- কনভেন্ট – খ্রিষ্টান নারী মিশনারিদের দ্বারা পরিচালিত স্কুল।
- মাসিঁয়ে- সৌজন্য প্রদর্শন ও সম্মান জানানোর জন্য ফ্রান্সে পুরুষদের মসিঁয়ে সম্বোধন করা হয়।
- মাদাম – সৌজন্য প্রদর্শন ও সম্মান জানানোর জন্য ফ্রান্সে মহিলাদের মাদাম সম্বোধন করা হয়।
- ফ্রাঁ – ফরাসি মুদ্রার নাম।
- ‘বল’ নাচ – বিনোদনমূলক সামাজিক নৃত্যানুষ্ঠান।
- ক্রুশ – খ্রিষ্টান ধর্মীয় প্রতীক।
- স্যাটিন – Satin মসৃণ ও চকচকে রেশমি বস্ত্র।
- প্যারী – প্যারিসের ফরাসি নাম।
- প্যালেস রয়েল – রাজকীয় প্রাসাদ।
সারমর্ম
সংসারে কিছু মানুষ থাকে যারা কল্পনাবিলাসী হয়, নিজেদের শ্রেষ্ঠ ভাবতে ভালোবাসে। বাস্তবে যা পায় না বা হতে পারে না বলে তাদের দু:খবোধও থাকে প্রবল। তাই বলে তারা বাস্তব অবস্থাকে মেনে নিতে পারে না তা নয়। পছন্দের পরিবেশ, পছন্দের জিনিসগুলো না পাওয়া সত্তে¡ও তারা পরিবারের সাথে মিশে থাকে। ‘নেকলেস’ গল্পে মাদাম লোইসেল ছিল চমৎকার সুন্দরী তরুণী। কেরানি পরিবারে জন্ম হওয়ায় পরিচিত হওয়ার, প্রশংসা পাওয়ার, প্রেমলাভ করার এবং কোন ধনী অথবা বিশিষ্ট লোকের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার তার কোন উপায় ছিল না। তার মনে সব সময় বিলাসিতাপূর্ণ চিন্তা ও চেতনা আভিজাত্যের লোভ ছিল। স্বামী শিক্ষাপরিষদ অফিসের সামান্য কেরানি হওয়ায় তার দু:খের কোন অন্ত ছিল না। জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মাদাম লোইসেলের কোন গহনা বা আকর্ষণীয় পোশাক ছিল না। মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য চারশ ফ্রাঁ দিয়ে জামা তৈরি করে এবং বান্ধবীর কাছ থেকে গহনা ধার করে। অনুষ্ঠানে আনন্দফূর্তি করে লোইসেল বাড়ি এসে দেখে বান্ধবীর কাছ থেকে ধার করা গহনা হারিয়ে গেছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর যখন গহনাটা আর না পেল তখন লোইসেল দম্পত্তি তার সর্বস্ব দিয়ে ঐ রকম একটি গহনা তৈরি করে বান্ধবীকে দিয়ে আসে। গহনার ধার পরিশোধ করতে তাদের দশ বছর কেটে যায় এবং এর সাথে লোইসেলের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। দশ বছর পরে যখন বান্ধবীর সাথে মাদাম লোইসেলেও দেখা হয় তখন লোইসেল পুরানো কাহিনী বলে। মাদাম ফোরস্টিয়ার লোইসেলের কথা শুনে দু:খ অনুভব করে, কারণ তার গহনাটি ছিল নকল।
নেকলেস সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ লাইন
- সে ছিল চমৎকার এক সুন্দরী তরুণী।
- নিয়তির ভুলেই যেন এক কেরানির পরিবারে তার জš§ হয়েছে।
- আয়নার সামনে গিয়ে সে জড়োয়া গহনাগুলি পরে দেখে।
- সে ছিল সবচেয়ে সুন্দরী, সুরুচিময়ী, সুদর্শনা, হাস্যময়ী ও আনন্দপূর্ণ।
- সব পুরুষ তাকে লক্ষ করছিল, তার নাম জিজ্ঞাসা করে তার সঙ্গে আলাপের আগ্রহ প্রকাশ করছিল।
- মন্ত্রিসভার সব সদস্যের তার সঙ্গে ‘ওয়ালটজ’ নৃত্য করতে ইচ্ছা হচ্ছিল।
- স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী তার দিকে দৃষ্টি দিচ্ছিলেন।
- ভোর চারটার দিকে সে বাড়ি ফিরে গেল।
- বাড়ি ফিরবার পথে গায়ে জড়াবার জন্য তারা যে আটপৌঢ়ে সাধারণ চাদর নিয়ে এসেছিল সে তার কাঁধের ওপর সেটি ছড়িয়ে দেয়।
- হতাশ হয়ে কাঁপতে কাঁপতে তারা সিন নদীর দিকে হাঁটতে থাকে সকাল সাতটার দিকে তার স্বামী ফিরে এল।
- তার দাম চলিশ হাজার ফ্রাঁ। ছত্রিশ হাজার ফ্রাঁতে তারা তা পেতে পারে।
- এরকম জীবন দশ বছর ধরে চলল।
- দশ বছরের শেষে তারা সব কিছু মহাজনের সুদসহ প্রাপ্য নিয়ে সব ক্ষতিপূরণ করে ফেলতে পারে।
- হায়, আমার বেচারী মাতিলদা! আমারটি ছিল নকল।
- তার দাম পাঁচশত ফ্রাঁর বেশি হবে না।’
গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (জ্ঞানমূলক)
- ‘সে ছিল চমৎকার এক সুন্দরী তরুণী’- উক্তিটি করা হয়েছে- নেকলেস গল্পের নায়িকা মাতিলদা সম্পর্কে।
- মাতিলদার জন্ম হয়েছিল – কেরানির পরিবারে।
- ‘তার ছিল না কোন আনন্দ, কোন আশা’- উক্তিটি করা হয়েছে- মাতিলদা সম্পর্কে।
- মাতিলদা ভাবতো যেসব পরিচিত ও আকাঙ্খিত পুরুষ সব মেয়েদের কাম্য তাদের সাথে গল্পগুজব করবে – বিকাল পাঁচটায়। (ছোট সুরভিত একটি কক্ষে।)
- মাতিলদা ভাবতো সে তার স্বামীর সান্ধ্যভোজে বসবে – তিনদিন ধরে ব্যবহৃত একখানা টেবিলক্লথে ঢাকা গোল টেবিলে।
- মাতিলদা ভাবতো তার স্বামী সান্ধ্যভোজে বসে ঢাকনা তুলবে- সুরুয়ার পাত্রের।
- মাতিলদা ভাবতো তার কক্ষের দেওয়াল ঢাকা থাকবে- মায়াময় বনভূমির মধ্যে প্রাচীণ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিরল পাখির চিত্রশোভিত কারুকার্য পূর্ণ পর্দা দিয়ে।
- মাতিলদা ভাবতো অপরূপ পাত্রে পরিবেশিত হবে- গোলাপি রঙের রোহিত মাছ অথবা মুরগির পাখনা।
- মাতিলদা ভাবতো গোলাপি রঙের রোহিত মাছের টুকরা অথবা মুরগির পাখনা খেতে খেতে সে শুনবে- প্রণয়লীলার কাহিনী।
- মাতিলদা ভাবতো সে প্রণয়লীলার কাহিনী শুনবে- মুখে সিংহমানবীর হাসি নিয়ে।
- মাতিলদার স্বামী আশা করেছিলেন কার্ড পড়ার পর মাতিলদা-খুশি হবে।
- কার্ডটি পড়ে মাতিলদা আমন্ত্রণলিপি- টেবিলের উপর নিক্ষেপ করল।
- ‘ওখানা দিয়ে তুমি আমায় কী করতে বল’- মাতিলদা একথাটি বলেছিল- বিড় বিড় করে।
- ‘সেখানে তুমি গোটা সরকারি মহলকে দেখতে পাবে’- এখানে বোঝানো হয়েছে- জনশিক্ষা মন্ত্রী ও মাদাম জর্জ রেমপননুর বাসগৃহে আয়োজিত অনুষ্ঠানের কথা।
- ‘সে ঐ সম্পর্কে কিছু ভাবে নি’- এখানে বোঝানো হয়েছে-অনুষ্ঠানে মাতিলদা কি পরে যাবে সে বিষয়ের কথা।
- মসিঁয়ে লোইসেল মাতিলদাকে অনুষ্ঠানে পরে যেতে বলল- থিয়েটারে যাবার সময় যে পোশাকটা পরেছিল মাতিলদা সেটা।
- মঁিসয়ে লাইসেল আতঙ্কে নির্বাক ও হতবুদ্ধি হয়ে গেল- মাতিলদাকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে দেখে।
- ‘সে মনে মনে দু:খ পায়’- এখানে দু:খ পায়- মঁিসয়ে লোইসেল।
- মাতিলদার মতে সে একটি পোশাক কিনতে পারবে- ৪০০ ফ্রাঁ হলে।
- মসিঁয়ে লোইসেলের মুখ ম্লান হয়ে গেল – পোশাকের দাম ৪০০ ফ্রাঁ হতে পারে এটা শুনে।
- লোইসেল দম্পতি বাড়ি ফিরল – ভোর ৪টায়।
- বল নাচের দিন খুব বেশি ফূর্তিতে মত্ত ছিল – ৩ জন ভদ্রলোকের স্ত্রী।
- বল নাচের পোশাকে মাতিলদার অপরূপ সৌন্দর্যের সঙ্গে দারিদ্র্য সুপরিস্ফুট হয়ে উঠছিল- আটপৌঢ়ে সাধারণ চাদর কাঁধে দেয়ায়।
- রাস্তায় বের হয়ে গাড়ি না পাওয়ায় লোইসের দম্পতি হতাশ হয়ে কাঁপতে কাঁপতে হাঁটতে থাকে – সিন নদীর তীরে।
- শেষ পর্যন্ত তারা যে গাড়ি পায় তা – নিশাচর দুই যাত্রীর গাড়ি।
- মাতিলদা ও লোইসেলের বাড়ি – মার্টার স্ট্রিটে।
- বল নাচের অনুষ্ঠানের পরদিন মসিঁয়ে লোইসেলের অফিসে পৌঁছতে হবে- সকাল ১০টায়।
- ‘হঠাৎ সে আর্তনাদ করে উঠল’- মাতিলদা আর্তনাদ করে উঠল- আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গলায় দামি হারখানা না দেখে।
- তাদের ধারণা হীরার হারটি পড়েছে – গাড়ির মধ্যে।
- হারটি খোঁজার জন্য বাসা থেকে বেরিয়ে গেল-মসিঁয়ে লোইসেল।
- মঁিসয়ে লোইসেল ফিরে এলো- সকাল ৭ টায়।
- তাদের মনে হারটি ফিরে পাবার একটা আশা ছিল – লোইসেল পুলিশের কাছে ও গাড়ির অফিসে গিয়েছিল এবং পুরস্কার ঘোষণা করে একটা বিজ্ঞাপনও দিয়ে এসেছিল বলে।
- তারা হারটি খুঁজে পাবার সব আশা ত্যাগ করল- ১ সপ্তাহ পর।
- মাতিলদা ও লোইসেল দুজনেরই শরীর বিরক্তি ও উদ্বেগে খারাপ হয়ে গেছে – যে হারটি তারা হারিয়েছিল তার মতো আরেকটি হারের জন্য এক স্বর্ণকারের থেকে অন্য স্বর্ণকারের কাছে যেতে যেতে।
- তাদের হারানো হারের মতো আরেকটি হার তারা দেখতে পেল- প্যালেস রয়েলে।
- প্যালেস রয়েলে দেখা হারটির দাম ছিল = ৪০ হাজার ফ্রাঁ।
- স্বর্ণকার তাদের জানালো তারা হারটি কিনতে পারে- ৩৬ হাজার ফ্রাঁতে।
- তারা স্বর্ণকারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করল যেন হারটি অন্য কারও কাছে বিক্রি না করা হয় – ৩ দিনের জন্য।
- তাদের হারটি হারিয়েছিল – ১৮ই জানুয়ারি।
- তারা নতুন যে হারটি কিনেছে তা ফেরত দিতে পারবে – যদি ফেব্র“য়ারি মাসের মধ্যে হারানো ছবিটি ফিরে পাওয়া যায়।
- পুরানো হারটি ফিরে পাওয়া গেলে তারা নতুন হারটি স্বর্ণকারের নিকট ফেরত দিয়ে নিতে পারবে- ৩৪ হাজার ফ্রাঁ।
- লোইসেলের কাছে তার বাবার মৃত্যুর পর প্রাপ্ত ছিল – ১৮ হাজার ফ্রাঁ
- লোইসেলের নতুন হারটি কেনার জন্য ধার করল -১৮ হাজার ফ্রাঁ।
- লোইসেল অফিসের পর সন্ধ্যাবেলা – কয়েকজন ব্যবসায়ীর হিসাবের খাতা ঠিক করে।
- লোইসেল প্রতি রাতে এক পাতালেখা নকল করে- পাঁচ সাও হিসেবে।
- প্রত্যেক মাসেই সময় চেয়ে বদল করতে হয় – কিছু কিছু দলিল।
- মাতিলদার দুর্যোগপূর্ণ দিন স্থায়ী হয়েছিল-১০ বছর।
গল্পটির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- গোলাপি রং
- সিংহ মানবীর হাসি
- উজ্জ্বল রৌপ্যপাত্রাদি
- নানাতিয়ারের সমভূমি
- বিরল পাখি
- ভরত পাখি
- রোহিত মাছ
- গোলাপ ফুল
- মুরগীর পাখনা
- স্যাটিনের বাক্স
- রবিবার
- সিন নদী
- গ্রীষ্ম
- মর্টার স্ট্রিট
- মাসের নাম : জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি
চরিত্র:
মাতিলদা লোইসেল, মসিঁয়ে লোইসেল, জনশিক্ষামন্ত্রী ও মাদাম জর্জ রেমপন্নু, লোইসেলের বন্ধু, মাদার ফোরসটিয়ার, মন্ত্রীসভার সদস্যরা, মোটাসোটা ভৃত্য, শিশু।
প্রথম ও শেষ লাইন
- প্রথম লাইন:সে ছিল চমৎকার এক সুন্দরী তরুণী।
- শেষ লাইন: হায়, আমার বেচারী মাতিলদা। আমারটি ছিল নকল। তার দাম পাঁচশত ফ্রার বেশি হবে না।’
অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর :
১। দরিদ্র কেরানি বন্দুক কিনতে পারেনি কেন?
উত্তর : স্ত্রীকে পোশাক কিনে দেওয়ায় দরিদ্র কেরানি বন্দুক কিনতে ব্যর্থ হয়। জনশিক্ষা মন্ত্রীর আমন্ত্রণপত্র এনে স্ত্রীকে দিয়েছিল মসিয়ে লোইসেল। শিক্ষামন্ত্রীর অনুষ্ঠানে ‘বল’ নাচে অংশগ্রহণ করার জন্য উন্নতমানের রুচিশীল পোশাকের প্রয়োজন। এ ধরনের পোশাক না থাকায় মাদাম লোইসেল চারশ ফ্রাঁ বায়না ধরে। এতে তার স্বামী প্রথমত হতবাক হলেও স্ত্রীকে খুশি করতে তাকে দামি জামা কিনে দিতে রাজি হয় চারশ ফ্রাঁ দিয়ে। ফলে কেরানির জীবনের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বন্দুক কিনে বন্ধুদের সাথে ভরতপাখি শিকার করতে যাওয়ার চিন্তাটি ভেস্তে যায়।
২। ‘হায়, আমার বেচারি মাতিলদা।’- কথাটি কে, কেন বলেছে?
উত্তর : অনেক বছর পর দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত মাদাম লোইসেলকে দেখে তার বান্ধবী মাদাম ফোরস্টিয়ার উক্ত উক্তিটি করে। বান্ধবী নেকলেস হারিয়ে ফেলার পর সেটা ফেরত দিতে মাতিলদা দারিদ্র্যময় কঠিন জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। সংসারের সব কাজ তাকে করতে হয়। এমনিভাবে দশ বছর ধরে তারা দেনা শোধ করে। একদিন মাতিলদা তার বান্ধবী ফোরস্টিয়ারকে দেখে সব কথা খুলে বলার জন্য তাকে ডাক দেয়। প্রথমে তার বান্ধবী জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে মাতিলদাকে চিনতে পারে না। পরে মাতিলদা নিজের পরিচয় দিলে ফোরস্টিয়ার উক্ত উক্তিটি করে।
৩। “নিয়তির ভুলেই যেন এক কেরানির পরিবারে তার জন্ম হয়েছে।”- কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : প্রশ্নোক্ত বাক্যটিতে মাদাম লোইসেলের বিলাসবহুল জীবনাকাঙ্খাকে তুলে ধরা হয়েছে। মাদাম লোইসেল একজন সাধারণ ঘরের মেয়ে। সে যথেষ্ট সৌন্দর্যের অধিকারিণী। সে তার সৌন্দর্যকে আরও বেশি পরিস্ফুট করতে চায়। নিজেকে বিলাসী হিসেবে ভাবতে সে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। ফলে চাওয়া পাওয়ার ব্যবধান তার জীবনের শান্তি কেড়ে নিয়েছে। এনে দিয়েছে দু:খকাতরতা। মেয়েটি কেরানি জীবনকে কোনক্রমেই মেনে নিতে পারে না। এ কারণেই উল্লিখিত উক্তিটি করা হয়েছে।
৪। মাদাম লোইসেলের বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে বিয়ে হওয়ার উপায় ছিল না কেন?
উত্তর : মাদাম লোইসেলের জন্ম কেরানির পরিবারে। তাই বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে তার বিয়ে হওয়ার উপায় ছিল না। ‘নেকলেস’ গল্পটিতে মাদাম লোইসেল গরিব ঘরের এক সুন্দরী মেয়ে। সে উচ্চাভিলাষী, স্বপ্নময় ও সুখী জীবন প্রত্যাশায় দিন-রাত নিজেকে ব্যস্ত রাখে তার নিজের দারিদ্র্যকে চরম ঘৃণা করে। সে কল্পনার চোখে এমন একজন পুরুষ কামনা করে, যে তার জীবনের সমস্ত আকাঙ্খা পূরণ করেন। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের গÐি থেকে সে কখনই বের হতে পারেনি, সন্ধান পায়নি কোন বিখ্যাত পুরুষের। মূলত দরিদ্র কেরানির পরিবারে জন্ম নেওয়ার কারণেই মাদাম লোইসেলের বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে বিয়ে হওয়ার উপায় ছিল না।
৫। “ও! কি ভালো মানুষ!”- কথাটি বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : কল্পনাবিলাসী মাদাম লোইসেলের প্রতি তার স্বামীর প্রশংসার দিকটি এখানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রত্যেক নারীই চায় স্বামী তাকে প্রশংসা করুক। এ ভাবনাটির ব্যতিক্রম হয়নি মাদাম লোইসেলের ক্ষেত্রেও। সে বিলাসবহুল চিন্তা করতে যেমন ভালোবাসে, তেমনি ভালোবাসে স্বামীর মুখ থেকে নিজের প্রতি প্রশংসা বাক্য শুনতে। এ ভালো লাগাটা পৃথিবীর প্রত্যেক নারীর মাঝেই চিরন্তন। স্বপ্নে বিভোর হওয়া মাদাম লোইসেল স্বামী কর্তৃক প্রশংসার বাক্য শোনার দিকটি উক্তিটিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
৬। মাদাম লোইসেল কীভাবে বিলাসবহুল জীবন সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠল?
উত্তর : পরিবার থেকে শ্রী, সৌন্দর্য ও মাধুর্য চর্চার মাধ্যমে মাদাম লোইসেল বিলাসবহুল জীবন সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে। মাদাম লোইসেল শৈশব থেকেই সৌন্দর্য-চেতনায় উদ্দীপ্ত। দারিদ্র্যের কারণে তা পূরণ করতে পারে না। অন্যদিকে না পাওয়ার ব্যর্থতা তাকে কষ্টের আগুনে পোড়াতে থাকে। তার কল্পনার রাজ্যে সে দামি, বিলাসবহুল জীবনযাপনে বিভোর থাকে বলে নিজেকে এক মুহূর্তের জন্যও শান্তি দিতে পারে না। মূলত মাদাম লোইসেলের পারিপার্শ্বিক জীবনানুভূতি ও মানসিক অবস্থাই তার বিলাসবহুল জীবনাঙ্খার জন্য দায়ী।
৭। মাদাম লোইসেল কেন একটি ছোট সুরভিত কক্ষ চেয়েছিল?
উত্তর : মাদাম লোইসেল বিকাল বেলায় তার প্রিয় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য বিলাসী চিন্তায় বিভোর হয়ে একটি ছোট সুরভিত কক্ষ প্রত্যাশা করেছিল। মানুষের কল্পনার জগৎ অসীম আকাঙ্খার সীমানা চিহ্নহীন। মাদাম লোইসেল একজন কল্পনাপ্রেমী, বিলাসী জীবনের প্রত্যাশী মানুষ। সে স্বপ্ন দেখে পৃথিবীর বিলাসবহুল সব উপকরণ নিজের মতো করে উপভোগ করবে। ঠিক অনুরূপভাবেই স্বপ্নে বিভোর হতে থাকে যে, তার একটি ছোট সুন্দর সুরভিত কক্ষ থাকবে, যেখানে বসে সে অন্তরঙ্গ বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে আনন্দচিত্তে আড্ডা দিবে।
৮। অতিরিক্ত পরিশ্রম মাদাম লোইসেলের শরীরে কেমন প্রভাব ফেলে?
উত্তর : অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে মাদাম লোইসেলকে বয়স্কা মনে হতো। হার ফেরত দিতে ঋণ করে তা শোধ করতে গিয়ে মাদাম লোইসেল গরিব গৃহস্থ ঘরের শক্ত, কর্মঠ ও অমার্জিত মেয়ের মতো হয়ে গিয়েছিলেন। তার চুল অবিন্যস্ত ও ঘাগরা একপাশে মোচড়ানো থাকত। দশ বছর পর মাদাম ফোরসটিয়ারে সঙ্গে তার দেখা হলে ফোরসটিয়ার তাকে চিনতেই পারেননি।
উদ্দীপকের বিষয়
- আত্মনির্ভরতার আনন্দ ও স্বাধীনতার সুখ।
- অতি লোভের পরিণাম।
- লোভের পরিণতি।
- পরিশ্রমের মাধ্যমে ভাগ্যের উন্নয়ন।
- পরনির্ভরশীলতা ত্যাগ করে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন।
- আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রত্যাশার মৃত্যু।
- উচ্চকাঙ্খাই ধ্বংসের কারণ।
- পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে দু:খকে জয় করা।
- কেরানি জীবনের পূর্ণতা -অপূর্ণতা।
- সংসারের দারিদ্র্য উপলদ্ধি।
- অন্যের জিনিস চাইতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা।
ব্যাকরণ
উপসর্গ সাধিত শব্দ: পরিষদ, পরিচিত, অক্ষমতা, অসুখী, পরিবার, সজাগ, সুরুচি, সমকক্ষ, বিবর্ণ, বেপরোয়া, বিক্ষিপ্ত, অপূর্ব, বিদ্বেষ, সুযোগ, অধীর, নির্বাক, প্রবল, বিচলিত, অপমান, পরিচয়, অপরূপ, সবেগ, আবেগ, সুদর্শন, আগ্রহ, বিজয়, বিছানা, সকাল, বিভ্রান্ত, নির্জীব, অবিন্যস্ত, অতিরিক্ত, সুপ্রভাত, অবাক, বিব্রত, দুর্দিন।
সন্ধি সাধিত শব্দ:
অন্তরঙ্গ, সংখ্যা, প্রত্যাখান, মণিমুক্তা, অত্যন্ত, পরিচ্ছেদ, পর্যন্ত, উচ্চাশা, প্রত্যেক, সঞ্চয়, অনুষ্ঠান, দুশ্চিন্তা।
সমাস সাধিত শব্দ।
প্রদত্ত শব্দ ব্যাসবাক্য সমাসের নাম
- প্রেমলাভ → প্রেমকে লাভ → দ্বিতীয়া তৎপুরুষ
- বেদনাভরা → বেদনা দ্বারা ভরা → তৃতীয়া তৎপুরুষ
- আলোকমণ্ডিত → আলোক দ্বারা মণ্ডিত → তৃতীয়া তৎপুরুষ
- গৃহ-ভৃত্য → গৃহের ভৃত্য → ষষ্ঠী তৎপুরুষ
- পায়জামা → পায়ে পরিধান করার জামা → কর্মধারয়
- আরামকেদারা → আরামের জন্য কেদারা → চতুর্থী তৎপুরুষ
- চিত্রশোভিত → চিত্র দ্বারা শোভিত → তৃতীয়া তৎপুরুষ
- বাসগৃহ → বাসের নিমিত্তে গৃহ → চতুর্থী তৎপুরুষ
- আনন্দপূর্ণ → আনন্দ দ্বারা পূর্ণ → তৃতীয়া তৎপুরুষ
- মন্ত্রিসভা → মন্ত্রীদের সভা → ষষ্ঠী তৎপুরুষ
- বিশ্রামকক্ষ → বিশ্রামের জন্য কক্ষ → চতুর্থী তৎপুরুষ
- কণ্ঠহার → কণ্ঠে পরিহিত হার → কর্মধারয়
- কাপড়-চোপড় → কাপড় ও চোপড় → দ্বন্দ
- গৃহস্থঘর → গৃহস্থের ঘর → ষষ্ঠী তৎপুরুষ
নং | বিষয় | লেখক |
১ | আমার পথ | কাজী নজরুল ইসলাম |
২ | বিড়াল | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
৩ | চাষার দুক্ষু | বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত |
৪ | সাম্যবাদী | কাজী নজরুল ইসলাম |
৫ | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
৬ | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | মাইকেল মধূসুদন দত্ত |
৭ | বায়ান্নর দিনগুলো | শেখ মুজিবুর রহমান |
৮ | অপরিচিতা | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
৯ | মাসি-পিসি | মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় |
১০ | জীবন ও বৃক্ষ | মোতাহের হোসেন চৌধুরী |
১১ | আমি কিংবদন্তির কথা বলছি | আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ |