লেখক পরিচিতি |
|
প্রকৃত নাম | মোহাম্মদ জসীমউদদীন মোল্লা |
ছদ্ম নাম | জমির উদ্দীন মোল্লা |
উপাধি | পল্লিকবি |
জন্ম সাল | ১৯০৩ সালে ১ জানুয়ারি |
কাব্যগ্রন্থ | রাখালী, নকশী কাঁথার মাঠ, ধানক্ষেত, এক পয়সার বাঁশি, বালুচর, হাসু, সোজন বাদিয়ার ঘাট, রঙিলা নায়ের মাঝি, রূপবতি, কাফনের মিছিল , মা যে জননী কান্দে, সকিনা, মাটির কান্না। |
নাটক | বেদের মেয়ে, গ্রামের মায়া, পল্লীবধূ, মধুমালা, পদ্মাপার। |
ভ্রমনকাহিনী | চলে মুসাফির, হলদে পরীর দেশ, যে দেশে মানুষ বড়। |
আত্মজীবনী | জীবনকথা, ঠাকুরবাড়ির আঙিনায়, যাঁদের দেখেছি। |
সাহিত্য বৈশিষ্ট্য | পল্লির মানুষের আশা-স্বপ্ন-আনন্দ বেদনার আবেগঘন চিত্র ফুটিয়ে তোলা। পল্লিকবি নামে খ্যাত। |
পুরস্কার ও সম্মাননা | একুশে পদক, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি লাভ করেন। |
মৃত্যু | ১৯৭৬ সালের ১৪ই মার্চ ঢাকায়। |
>>> মূল বক্তব্য:
‘প্রতিদান’ কবিতাটি ‘পল্লিকবি’ খ্যাত কবি জসীমউদ্দীনের ‘বালুচর’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। এই কবিতায় কবির পরার্থপর চেতনার প্রকাশ ঘটেছে। এই কবিতার মধ্য দিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ বিসর্জন দিয়ে অন্যের জন্য নিজেকে নিবেদন করার কথা বলা হয়েছে। কারণ পরার্থপরতাই জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য। পরার্থপর মানুষই প্রকৃত সুখী। কবির চিন্তার মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারি যে, সমাজ- সংসারে বিদ্যমান হিংসা- বিভেদ, বৈষম্য, প্রতিশোধ আর প্রতিহিংসা দূর করতে হবে। তা হলেই সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। কারণ মানুষ সহনশীল হলেই সুন্দর পৃথিবী নির্মাণ করা সম্ভব। কবি তাই তাঁর প্রতি অন্যায়, অবিচার ও হিংসা করা ব্যক্তিকে ক্ষমা করে বুকে টেনে নেন। কারণ তিনি সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের পৃথিবী প্রত্যাশা করেন।
>>> প্রশ্নোত্তর:
১। জসীমউদ্দীনের পিতার নাম কী ?
উত্তর: আনসারউদ্দীন মোল্লা।
২। জসীমউদ্দীন কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন ?
উত্তর: জসীমউদ্দীন ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
৩। জসীমউদ্দীন কোন কলেজ থেকে বিএ পাস করেন?
উত্তর: ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে জসীমউদ্দীন বিএ পাস করেন।
৪। জসীমউদ্দীনকে ডিলিট প্রদান করে কোন বিশ্ববিদ্যালয় ?
উত্তর: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় জসীমউদ্দীনকে ডিলিট প্রদান করে।
৫। জসীমউদ্দীন কত সালে মৃত্যুবরণ করেন ?
উত্তর: জসীমউদ্দীন ১৯৭৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
৬। ‘প্রতিদান’ কবিতার রচয়িতা কে ?
উত্তর: ‘প্রতিদান ’ কবিতার রচয়িতা জসীমউদ্দীন।
৭। ‘প্রতিদান’ কবিতায় স্তবক কয়টি ?
উত্তর: ‘প্রতিদান ’ কবিতায় স্তবক রয়েছে তিনটি।
৮। ‘বালুচর’ কাব্যগ্রন্থটি কার লেখা ?
উত্তর: ‘বালুচর ’ কাব্যগ্রন্থটি জসীমউদ্দীনের লেখা।
৯। ‘প্রতিদান’ কবিতায় কার ঘর ভাঙার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর: ‘প্রতিদান’ কবিতায় কবির ঘর ভাঙার কথা বলা হয়েছে।
১০। কবিকে যে পথের বিরাগী করেছে কবি তার জন্য কী
উত্তর: যে কবিকে পথের বিরাগী করেছে কবি তার জন্য পথে পথে ঘোরেন।
১১। কবি কাকে আপন করার জন্য কেঁদে বেড়ান ?
উত্তর: কবিকে যে পর করেছে তাকে আপন করার জন্য কেঁদে বেড়ান।
১২। ‘প্রতিদান’ কবিতা অনুসারে কে পথের বিরাগী ?
উত্তর : ‘প্রতিদান’ কবিতা অনুসারে কবি পথের বিরাগী।
১৩। কবি কার মুখ নিরন্তর সাজান ?
উত্তর: যে নিঠুরিয়া বাণী উচ্চারণ করে কবি তার মুখ নিরন্তর
১৪। ‘প্রতিদান’ কবিতায় কোন ধরনের ফুলের উল্লেখ আছে ?
উত্তর: ‘প্রতিদান’ কবিতায় রঙিন ফুলের উল্লেখ আছে।
১৫। ‘প্রতিদান’ কবিতায় কবির কোথায় আঘাত করার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর: ‘প্রতিদান’ কবিতায় কবির বুকে আঘাত করার কথা বলা হয়েছে।
১৬। ‘বাণ’ শব্দের অর্থ কী ?
উত্তর: ‘বাণ ‘ শব্দের অর্থ তীর বা শর।
১৭। ‘মালঞ’ শব্দের অর্থ কী ?
উত্তর : ‘মালঞ ’ শব্দের অর্থ হলো ফুলের বাগান।
১৮৷ ‘বিরাগী’ শব্দের অর্থ কী ?
উত্তর: ‘ বিরাগী ’ শব্দের অর্থ উদাসীন।
১৯। ‘বাণী’ শব্দের অর্থ কী ?
উত্তর: ‘বাণী ‘ শব্দের অর্থ হলো ভাষণ বা কথা।
২০। ‘রজনী’ শব্দের অর্থ কী ?
উত্তর :’ রজনী ‘ শব্দের অর্থ হলো রাত।
>>> ব্যাখ্যা মূলক প্রশ্ন:
প্রশ্ন ১। “আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা, আমি বাঁধি তার ঘর” চরণটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কবির ঘর যে ভেঙেছে, কবি তার ঘর তৈরি করে দেন আলোচ্য চরণের মাধ্যমে এটিই প্রকাশ পেয়েছে। আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা অন্যের ক্ষতিসাধন করতে সর্বদা ব্যাপৃত থাকে। তারা কখনো অন্যের ভালো সহ্য করতে পারে না। তারা অন্যের অপকার করতে গিয়ে মূলত নিজেরই ক্ষতি করে। এমন ক্ষতিকর মানুষ কবির ঘর ভাঙে। এতে কবির অপকার হলেও তিনি মনে কোনো ক্ষোভ রাখেন না। বরং কবির ঘর যে ভেঙেছে, কবি তার ঘর প্রস্তুত করে দেন। এর মাধ্যমে কবির উদার মহানুভবতার পরিচয় পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ২। কবির পথে পথে ঘুরে বেড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কবিকে যে পথের বিরাগী করেছে, কবি তাকে আপন করার জন্য পথে পথে ঘোরেন। সব মানুষ সমান নয়। কিছু মানুষ আছে যারা ভীষণভাবে আত্মকেন্দ্রিক। তারা অন্যকে গুরুত্ব দিতে চায় না। কেবল নিজেরা ভোগ- বিলাসে আসক্ত থাকে। এমনই এক আত্মকেন্দ্রিক মানুষ কবিকে পথের বিরাগী করে। এতে কবির দুঃখ নেই। তাই কবিকে যে পথের বিরাগী করেছে কবি তার জন্যই পথে পথে ঘুরে বেড়ান। কারণ কবি তাকে আপন করতে চান।
প্রশ্ন ৩। “দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হরেছে মোর।”-ব্যাখ্যা কর। অথবা, কবি কার জন্য জেগে থাকেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কবির ঘুম যে কেড়ে নিয়েছে কবি তার জন্য জেগে থাকেন বহুনির্বাচনি অংশ প্রিয় শিক্ষার্থী, এ অংশে তোমাদের সেরা প্রস্তুতির জন্য কবি একজন উদার, মহৎ ও সুন্দর হৃদয়ের মানুষ। পরার্থপরতা তাঁর অন্যতম প্রধান গুণ। সব মানুষের জন্যই তাঁর প্রাণ কাদে। তাই তো দীর্ঘ রাত কবি জেগে থাকেন। তিনি তার জন্য জেগে থাকেন, যে ব্যক্তি তার ঘুম হরণ করেছে। অর্থাৎ কষ্ট পেলেও কবি বুক ভরা ভালোবাসা দিয়ে তাকে আগলে রাখেন, যে কবির ক্ষতি করেছে। তাই কবি বলেছেন, দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হরেছে মোর। ‘
প্রশ্ন ৪। কবি কাকে বুকভরা গান দেন ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যে কবিকে বিষে ভরা বাণ দেয় কবি তাকে বুকভরা গান দেন। পৃথিবীর সব মানুষ সমান চেতনার অধিকারী নয়। কিছু মানুষ আছে যাদের আচরণ বা কর্মকান্ড অন্যের বুকে বিষাক্ত বাণের মতো বিঁধে। তারা কথা বা আচরণ দিয়ে জর্জরিত করে অন্যের জীবন। কবি এমন মানুষদের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, যারা কথা বা কাজে নির্মমভাবে জর্জরিত করে কবি তাদের জন্য রাখেন বুক ভরা গান। অর্থাৎ কবিকে যারা বিষে ভরা বাণ দেয় কবি তাদের জন্য বুক উজাড় করে গান দেন।
প্রশ্ন ৫। কবি নিরন্তর কী সাজান ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যার মুখ দিয়ে নিষ্ঠুর বাণী উচ্চারিত হয় কবি তার মুখখানি নিরন্তর সাজান। সমাজে এমন একশ্রেণির মানুষ আছে যাদের আচরণ ও ব্যবহার অন্যকে যন্ত্রণা দেয়। তাদের নিষ্ঠুর বাণী অন্যের হৃদয়ে কাঁটার মতো আঘাত করে। কবি এমন মানুষের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, যে ব্যক্তি কবিকে এমন নিষ্ঠুর বাণী শোনায় কবি তাকেও ভালোবেসে আপন করে নেন। তার মুখখানি বিভিন্ন দিক থেকে আনা সুমিষ্ট বচনে নিরন্তর সাজান। তাই বলা যায় যে, কবি তার মুখখানি নিরন্তর সাজান যে ব্যক্তি মুখ দিয়ে নিষ্ঠুর বাণী উচ্চারণ করে।
>>> শব্দার্থ:
- বাঁধি – বেঁধে দিই, বন্ধন করি।
- কুল – বংশ, আভিজাত্য।
- বিষ – গরল, দ্বেষ।
- বাণ – তীর, শর।
- জনম – জন্ম।
- রঙিন – রঞ্জিত, বিচিত্র বর্ণে রঞ্জিত বা শোভিত।
- বাণী – ভাষা, উত্তি, ভাষণ।
- সখি – সহচরী, বান্ধবী।
>>> বানান:
কাঁদা, দীঘল, রজনী, কুল, আঘাত, বিষ, বাণ, কাঁটা, জনম, রঙিন, মালঞ্চ, নিঠুরিয়া, বাণী, সখি, ঠাঁই, নিরন্তর।
>>> চুম্বুক পয়েন্ট:
- ‘প্রতিদান’ কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীন রচিত।
- জসীমউদ্দীন পল্লিকবি হিসেবে খ্যাত।
- ‘প্রতিদান’ কবিতাটি ‘বালুচর’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে।
- ‘প্রতিদান’ কবিতাটির উপজীব্য বিষয় পরার্থপরতা।
- কবি মহৎ, উদার, ক্ষমাশীল হৃদয়ের মানুষ, তাই তিনি শত্রুকেও আপন করে নেন।
- ‘প্রতিদান’ কবিতায় প্রতিদানে ঘর বাঁধা, দীঘল রজনী জাগা, বুকভরা গান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
- কবি নিঠুর বাণী উচ্চারণকারীর মুখখানিও ভালোবাসেন।
- যে ব্যক্তি কবিকে কষ্ট দেয় তিনি নিরন্তর তাকে আপন করতে কেঁদে বেড়ান।
- কবি অনিষ্টকারীর উপকার করার মধ্য দিয়ে পৃথিবীকে সুন্দর করতে চান।
HSC বাংলা সাহিত্য গল্প,কবিতা,উপন্যাস
নং | গল্প + কবিতার নাম | সাহিত্যিকদের নাম | লিঙ্ক |
---|---|---|---|
০১ | আমার পথ | কাজী নজরুল ইসলাম | Click |
০২ | বিড়াল | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Click |
০৩ | চাষার দুক্ষু | বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত | Click |
০৪ | বায়ান্নর দিনগুলো | শেখ মুজিবুর রহমান | Click |
০৫ | অপরিচিতা | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Click |
০৬ | মাসি-পিসি | মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় | Click |
০৭ | জীবন ও বৃক্ষ | মোতাহের হোসেন চৌধুরী | Click |
০৮ | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | Click |
০৯ | নেকলেস | গী দ্য মোপাসাঁ/ পূর্ণেন্দু দস্তিদার | Click |
১০ | রেইনকোট | আখতারুজ্জামান ইলিয়াস | Click |
১১ | আহ্বান | বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় | Click |
১২ | মহাজাগতিক কিউরেটর | মুহম্মদ জাফর ইকবাল | Click |
১৩ | সাম্যবাদী | কাজী নজরুল ইসলাম | Click |
১৪ | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Click |
১৫ | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | মাইকেল মধূসুদন দত্ত | Click |
১৬ | নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় | সৈয়দ শামসুল হক | Click |
১৭ | তাহারেই পড়ে মনে | সুফিয়া কামাল | Click |
১৮ | ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ | শামসুর রাহমান | Click |
১৯ | রক্তে আমার অনাদি অস্থি | দিলওয়ার খান | Click |
২০ | সেই অস্ত্র | আহসান হাবিব | Click |
২১ | আঠারো বছর বয়স | সুকান্ত ভট্টাচার্য | Click |
২২ | লোক লোকান্তর | মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ | Click |
২৩ | এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে | জীবনানন্দ দাশ | Click |
২৪ | আমি কিংবদন্তির কথা বলছি | আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ | Click |
২৫ | লালসালু | সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ | Click |
২৬ | সিরাজউদ্দৌলা | সিকান্দার আবু জাফর | Click |
২৭ | বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Click |
২৮ | বিদ্রােহী | কাজী নজরুল ইসলাম | Click |
২৯ | গৃহ | রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন | Click |
৩০ | মানব কল্যাণ- | আবুল ফজল | Click |
৩১ | বিলাসী | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Click |
৩২ | সোনার তরী | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Click |