Friday, March 29, 2024
Homeএইচএসসি বাংলা সাহিত্যবায়ান্নরদিনগুলো- শেখ মুজিবুর রহমান

বায়ান্নরদিনগুলো- শেখ মুজিবুর রহমান

শেখ মুজিবুর রহমান

বায়ান্নর দিনগুলো- শেখ মুজিবুর রহমান

নাম শেখ মুজিবুর রহমান

⇒ জন্ম পরিচয় জন্মতারিখ : ১৭ মার্চ, ১৯২০ খ্রিস্টাব্দ।
⇒ জন্মস্থান : টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
⇒ পিতৃ ও মাতৃ পরিচয় পিতার নাম : শেখ লুৎফর রহমান।
⇒ মাতার নাম : সাহেরা খাতুন।
⇒ শিক্ষাজীবন ম্যাট্রিক (১৯৪২), গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল। আইএ(১৯৪৪), কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ।
বিএ(১৯৪৬), কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ল’ ক্লাসে ভর্তি (অসমাপ্ত) ১৯৪৭। পেশা/কর্মজীবন (রাজনৈতিক জীবন) ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় কৃষি, বন ও সমবায় মন্ত্রী নিযুক্ত। ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান দ্বিতীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত। ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম ও দুর্নীতি দমন দফতরের মন্ত্রী নিযুক্ত। ১৯৬৬ সালের ২০ মার্চ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত। ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ।

⇒ পুরস্কার ও সম্মাননা বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলনের অনন্য ভূমিকা পালন করায় এবং এর ভিত্তিতে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তিনি ‘জাতির পিতা’ হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত। বিশ্বশান্তি পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত ‘জুলিও কুরী’ পদক লাভ।
⇒ জীবনাবসান মৃত্যুতারিখ : ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ।

নং বিষয় লেখক
আমার পথ কাজী নজরুল ইসলাম
বিড়াল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
চাষার দুক্ষু বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত
সাম্যবাদী কাজী নজরুল ইসলাম
ঐকতান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ মাইকেল মধূসুদন দত্ত

 

লেখক সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

 ১৯৫৬ সালে কোয়ালিশন সরকারের শিল্প-বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতিদমন ও ভিলেজ এইড মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
 ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোর সম্মেলনে বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি পেশ করেন।
 ১৯৬৬ সালের ২০ মার্চ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
 ১৯৭০ সালের তৎকালীন পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।
 ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্সের জনসমুদ্র থেকে ঘোষণা করেন“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা”
 ম্যাট্রিক(এস.এস.সি) গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল। আইএ,কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ। বিএ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে অধ্যায়ন।
 ১৯৫৩ সালের ৯ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
 ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক সদস্য নির্বাচিত হন।
 ১৯৫৫ সালের ২১ অক্টোবর আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি প্রত্যাহার করা হয়। তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুনরায় দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
 ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত আনুমানিক ১২.২০ মিনিটে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে গ্রেফতার হওয়ার পুর্বে) তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
 ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তাঁকে রাষ্ট্রপতি করে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়।
 ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারী স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
 ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বায়ান্নর দিনগুলো

উৎস পরিচিতি :

“জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের “বায়ান্নর দিনগুলো” তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী” (২০১২) গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। বায়ান্নর দিনগুলো।

মূলবাণী/মর্মবাণী/উপজীব্য বিষয়:

ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট।

শব্দার্থ:

অনশন ধর্মঘট – কোনো ন্যায্য দাবি পূরণের লক্ষ্যে একটানা আহার বর্জনের সংকল্প।
সুপারিনটেনডেন্ট – তত্তাবধায়ক।
ডেপুটি জেলার – উপকারাধ্যক্ষ।
‘ইয়ে কেয়া বাত..মে’ – এ কেমন কথা।
প্লুরোসিস – বক্ষব্যাধি।
আমলাতন্ত্র – রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে সরকারি কর্মচারীদের কর্তৃত্বমূলক ব্যবস্থা।
রেডিওগ্রাম – বেতারবার্তা।
প্রকোষ্ঠ – ঘর বা কুঠরি।

চরিত্র:
শেখ মুজিবুর রহমান, মহিউদ্দিন, আমীর হোসেন (সুপারিনটেডেন্ট), জমাদার, আইবি অফিসার, সুবেদার ও গোয়েন্দা কর্মচারী, ট্যাক্সিওয়ালা, জেল অফিসার, সিপাহী, জেলার, সিভিল সার্জন, ডাক্তার সাহেব, ছাত্রছাত্রীরা, নূরুল আমিন, প্রফেসর, মাওলানা ভাসানি, শামসুল আলম, খান সাহেব ওসমান আলী, কয়েদি, হাচু, রেণু, আব্বা (শেখমুজিবের বাবা) কামাল।

প্রথম ও শেষ লাইন:

 প্রথম লাইন : এদিকে জেলের ভেতর আমরা দুইজন প্রস্তুত হচ্ছিলাম অনশন ধর্মঘট করার জন্য।
 শেষ লাইন : শাসকরা যখন শোষক হয় অথবা শোষকদের সাহায্য করতে আরম্ভ করে তখন দেশের ও জনগণের মঙ্গল হওয়ার চেয়ে অমঙ্গলই বেশি হয়।

সারমর্ম:
তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠির অপশাসন ও বিনাবিচারে বৎসরের পর বৎসর রাজবন্দিদের কারাগারে আটক রাখার প্রতিবাদে ১৯৫২ সালে লেখক অনশন ধর্মঘট করেন। স্মৃতি চারণে ব্যক্ত হয়েছে অনশনকালে জেল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও আচরণ, নেতাকর্মীদের সাথে সাক্ষাৎ ও তাদের কাছে বার্তা পৌছানোর নানা কৌশল ইত্যাদি। স্মৃতিচারণে বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে ঢাকায় একুশে ফেব্রæয়ারি তারিখে ছাত্রজনতার মিছিলে গুলির খরব। সেই সঙ্গে অনশনরত অবস্থায় মৃত্যু অত্যাসন্ন জেনে পিতা-মাতা-স্ত্রী- সন্তানদের নিয়ে ভাবনা এবং অবশেষে মুক্তি পেয়ে স্বজনদের কাছে ফিরে আসার স্মৃতি হৃদয়স্পর্শী বিবরণও পরিস্ফুট হয়েছে সংকলিত অংশে, বায়ান্নর দিনগুলো।

পাঠ বিশ্লেষণ:

 “মাতৃভাষা আন্দোলন পৃথিবীতে এই প্রথম বাঙালিরাই রক্ত দিল।”
পাকিস্তানি শাসকদের উর্দু ভাষার পরিবর্তে বাংলা ভাষাকে রক্ষা ও রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালিরাই প্রথম আন্দোলন করেছে। বাঙালিরাই প্রথম ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে মাতৃভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে। এর আগে পৃথিবীর কোথাও কোন ভাষার জন্য মানুষ এভাবে আন্দোলন করেনি, জীবনও দেয়নি। আলোচ্য কথাটির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ কথাই প্রকাশ করেছেন।

 “আমি ভাবলাম, দেখব কি না জানি না, তবে রক্ত যখন আমাদের ছেলেরা দিয়েছে তখন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা না করে আর উপায় নাই।”
বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে এ দেশের ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গে রাজপথে মিছিল বের করেন। সেই মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে অনেকই শহিদ হন। ফলে সারা দেশ জেগে ওঠে। বিদেশেও এর প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা অব্যাহত থাকে। এসব বিষয় ভেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাই মন্তব্য করেন, “রক্ত যখন আমাদের ছেলেরা দিয়েছে তখন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা না করে তাদের আর উপায় নেই।”

“মানুষের যখন পতন আসে তখন পদে পদে ভুল হতে থাকে।”
ভুল থেকেই মানুষের পতনের শুরু হয়। আর প্রতিটি পদক্ষেপে যখন ভুল হতে থাকে তখন পতন নিশ্চিত হয়ে যায়। তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষুদ্ধ ও প্রতিবাদী ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যা করে যে ভুল করেছে সে প্রসঙ্গেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ কথা বলেছেন। এসব ভুলের খেসারত ষড়যন্ত্রকারী শাসকগোষ্ঠীকে অবশ্যই দিতে হবে-এ ছিল তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা। তারা নিজেদের পতন ঠেকাতে পারবে না।

 “ইয়ে কেয়া বাত হ্যায়, আপ জেলখানা মে।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমদ যাতে অনশন ধর্মঘট করতে না পারেন, সেজন্য তাদেরকে দ্রুত অন্য জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এ কাজের দায়িত্ব পান আর্মড পুলিশের একজন সুবেদার ও কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মচারী। সুবেদার সাহেব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে খুব ভালোবাসতেন, শ্রদ্ধা করতেন। তাই তাঁকে কারাগারে দেখে বিস্মিত হয়ে তিনি আলোচ্য উক্তিটি করেছিলেন।

 “আমি ভাবলাম, দেখব কি না জানি না, তবে রক্ত যখন আমাদের ছেলেরা দিয়েছে তখন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা না করে আর উপায় নাই।”
বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে এ দেশের ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে রাজপথে মিছিল বের করেন। সেই মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে অনেকেই শহিদ হন। ফলে সারা দেশ জেগে ওঠে। বিদেশেও এর প্রতিবাদে তীব্র নিন্দান অব্যাহত থাকে। এসব বিষয় ভেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাই মন্তব্য করেন, “রক্ত যখন আমাদের ছেলেরা দিয়েছে তখন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা না করে তাদের আর উপায় নেই।”

 “সরকার আমাদের বৎসরের পর বৎসর বিনা বিচারে আটক রাখছে, তারই প্রতিবাদ করার জন্য অনশন ধর্মঘট করছি।”
তৎকালীন পাকিস্তান সরকার এদেশের রাজনীতিবিদদের বছরের পর বছর বিনাবিচারে আটক করে রাখত। তাঁদের বিচারের আওতায় আনা হতো না। রাজবন্দিদের পরিবারের কাউকে জানতে দেওয়া হতো না তাঁদের অবস্থানের ঠিকানা। এই অনাচার ও মানসিক নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমদ জেলখানায় আমরণ অনশন ধর্মঘট শুরু করেন।

 জনমত সৃষ্টি হয়েছে, জনমতের বিরুদ্ধে যেতে শোষকরাও ভয় পায়।
বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার পক্ষে এ দেশে বিশাল জনমত গড়ে ওঠে, দেশজুড়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু হয় এবং বিশ্ববাসী বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন শহিদ হওয়ার পর আন্দোলনের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। স্বেচ্ছাচারী সরকার ভয় পেয়ে নেতাকর্মীদের ধরতে শুরু করে। ফলে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে ওঠে। তখন শোষ কগোষ্ঠী জনমততে ভয় পেয়ে যায়। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা না করে তাদের আর উপায় নেই। এ প্রসঙ্গেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এসব কথা বলেন।

 “মনের কথা প্রকাশ করতে পারলে ব্যথাটা কিছু কমে যায়।”
প্রিয়জন দূরে থাকলে, সমস্যায় থাকলে স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তা হয়। মনে এক ধরনের ভয় বা সন্দেহ কাজ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন জেলে থাকতেন তখন তিনি প্রিয়জনদের কথা ভাবতেন। মুক্তি পেয়ে বাড়ি আসার পর তাঁর স্ত্রীর জমানো কথার বাঁধ ভেঙ্গে যায়। তখন তাঁর দু:খ, অভিমান, অভিযোগ সব প্রকাশ পায়। মনের মধ্যে চেপে রাখা কথাগুলো বলার সুযোগও দেন তিনি। কারণ তিনি জানেন, মনের কথা প্রকাশ করতে পারলে ব্যথাটা কিছু কমে যায়।

বায়ান্নর দিনগুলো সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ লাইন:

⇒ মোখলেসুর রহমান সাহেব খুবই অমায়িক, ভদ্র ও শিক্ষিত ছিলেন।
⇒ আমাদের জন্য বন্ধ ঘোড়ার গাড়ি আনা হয়েছে।
⇒ আমরা ফরিদপুর জেলে আছি এবং অনশন ধর্মঘট করছি।
⇒ তারপর অনশন ধর্মঘট শুরু করলাম। দুই দিন পর অবস্থা খারাপ হলে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো।
⇒ মহিউদ্দিন ভুগছে প্লুরোসিস রোগে, আর আমি ভুগছি নানা রোগে।
⇒ চার দিন পরে আমাদের নাক দিয়ে জোর করে খাওয়াতে শুরু করল।
⇒ মহাবিপদ! নাকের ভিতর দিয়ে নল পেটের মধ্যে পর্যন্ত দেয়।
⇒ ২২ তারিখে সারা দিন ফরিদপুরে শোভাযাত্রা চলল।
⇒ জনাব নূরুল আমিন বুঝতে পারলেন না, আমলাতন্ত্র তাঁকে কোথায় নিয়ে গেল।
⇒ মানুষের যখন পতন আসে তখন পদে পদে ভুল হতে থাকে।
⇒ সিভিল সার্জন সাহেব দিনের মধ্যে পাঁচ- সাতবার আমাদের দেখতে আসেন।
⇒ বাংলাদেশ যে আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করে।”
⇒ দেশকে ও দেশের মানুষকে ভালোবাসি, তাদের জন্যই জীবন দিতে পারলাম, এই শান্তি”
⇒ রেণুর দশা কী হবে? তার তো কেউ নাই দুনিয়ায়।
⇒ দুই চামচ ডাবের পানি দিয়ে মহিউদ্দিন আমার অনশন ভাঙিয়ে দিল।
⇒ মানুষ স্বার্থের জন্য অন্ধ হয়ে যায়।
⇒ আজ দুইশত বৎসর পরে আমরা স্বাধীন হয়েছি।

গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (জ্ঞানমূলক):

১। অনশন ধর্মঘট করার জন্য জেলের ভিতর প্রস্তুত হচ্ছিল -বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহিউদ্দিন আহমদ।
২। জেলের সুপারিনটেনডেন্ট ছিলেন – আমীর হোসেন।
৩। তৎকালীন রাজবন্দিদের ডেপুটি জেলার ছিলেন- মোখলেসুর রহমান
৪। অনশন ধর্মঘট ভাঙ্গার জন্য বুঝিয়েছিলেন – আমীর হোসেন ও মোখলেসুর রহমান।
৫। রাজবন্দিদের সাথে মনোমালিন্য হয়নি – জেল কর্তৃপক্ষের।
৬। অনশন ধর্মঘটের ব্যাপারে কথা আছে – এ কথা বলে শেখ মুজিবুর রহমানকে জেলগেটে নিয়ে যাওয়া হয়- ১৯৫২ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি।
৭। জেলগেটে পৌঁছানোর পর শেখ মুজিব দেখলেন, একই কথা বলে নিয়ে আসা হয়েছে- মহিউদ্দিন আহমদকে।
৮। জেলগেটে আসার কয়েক মিনিট পর বঙ্গবন্ধুর মালপত্র, কাপড়চোপড় ও বিছানা নিয়ে হাজির হলো – জমাদার।
৯। ‘আপনাদের অন্য জেলে পাঠানোর হুকুম হয়েছে”- উক্তিটি জেল কর্তৃপক্ষের।
১০। প্রথম জাহাজ না পাওয়ার পর তারা জানতে পারলো আরেকটা জাহাজ ছেড়ে যাবে – রাত ১টায়।
১১। প্রথম জাহাজ না পাওয়ার পর তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল- নারায়ণগঞ্জ থানায়।
১২। নারায়ণগঞ্জ থানা থেকে তাদেরকে নিয়ে স্টেশনে আসা হলো- রাত ১১টায়।
১৩। রাতে জাহাজ ছাড়ার পর তাঁরা – বিছানা করে শুয়ে পড়েছিল।
১৪। পরদিন রাতে তারা জাহাজে করে এসে পৌছালো – গোয়ালন্দ ঘাটে।
১৫। গোয়ালন্দ ঘাট থেকে তারা ট্রেনে এসে ফরিদপুর পৌছাল-রাত ৪ টায়।
১৬। রাতে জেল কর্তৃপক্ষ বন্দিদের গ্রহণ না করায় তাদের দুজনকে রাত কাটাতে হয়েছিল – সিপাহীদের ব্যারাকের বারান্দায়।
১৭। বঙ্গবন্ধু সুবেদার সাহেবকে নাশতা করার কথা বললেন, কিন্তু তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল -ফরিদপুরের সহকর্মীদের সাথে দেখা করা।
১৮। বঙ্গবন্ধু যে ফরিদপুর জেলে আছে এটা সে প্রথমে বলেছিল – চায়ের দোকানদারকে।
১৯। জেলের দিকে রওয়ানা করার সময় বঙ্গবন্ধুর দেখা হয়- মহিউদ্দিন নামে আওয়ামীলীগের এক কর্মীর সাথে।
২০। বঙ্গবন্ধু ইলেকশনে ওয়াকার ইনচার্জ ছিলেন – ১৯৪৬ সালে।
২১। মহিউদ্দিন নামক যে আওয়ামী লীগের কর্মীর সাথে বঙ্গবন্ধুর দেখা হয় সে যাচ্ছিল – সাইকেলে করে।
২২। ২১ এ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় কয়েকজন লোক গুলি খেয়ে মারা গেছে একথা বঙ্গবন্ধু জানতে পারলেন – সিপাহীদের মাধ্যমে।
২৩। ফরিদপুরে জেলগেটে ছাত্র ছাত্রীরা শোভাযাত্রা করে ম্লোগান দিচ্ছিল -একথা শুনে বঙ্গবন্ধু মন খারাপ করলেন কারণ – ছাত্র-ছাত্রীদের কেবল বঙ্গবন্ধুর নামে শ্লোগান দিচ্ছিল মহিউদ্দিনের নামে কোন স্লোগান দিচ্ছিল না তাই।
২৪। ২২ তারিখের সারাদিন শোভাযাত্রা চলল- ফরিদপুরে।
২৫। অপরিণামদর্শিতার কাজ করেছে – মুসলিম লীগ সরকার।
২৬। ‘আমলাতন্ত্র তাকে কোথায় নিয়ে গেল’- নূরুল আমিনের যে বৈশিষ্ট্যের কারণে বঙ্গবন্ধু এরূপ মন্তব্য করেছেন তা হলো- অদূরদর্শিতা।
২৭। ২১ এ ফেব্রুয়ারি গুলি হয়েছিল – মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের এরিয়ার ভিতরে।
২৮। মানুষের যখন পতন হয় তখন- পদে পদে ভুল হয়।
২৯। ‘নারায়ণগঞ্জে বাড়ির ভিতরে ঢুকে ভীষণ মারপিট করেছে’- এখানে বলা হয়েছে – খান সাহেব ওসমান আলীর বাড়ির কথা।
৩০। একজন কয়েদি বঙ্গবন্ধুর হাত পায়ে মালিশ করতে শুরু করল- সরিষার তেল গরম করে।
৩১। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির অর্ডার এসেছিল- ২৭ তারিখ রাত ৮ টায়।
৩২। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির আদেশ পড়ে শোনালেন – ডেপুটি জেলার সাহেব
৩৩। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির অর্ডারটা শুয়ে শুয়ে দেখল – মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর
৩৪। অর্ডার পড়ে বঙ্গবন্ধুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিল – মহিউদ্দিন।
৩৫। বঙ্গবন্ধু অনশন ভাঙলেন – দুই চামচ ডাবের পানি খেয়ে।
৩৬। বঙ্গবন্ধুকে ডাবের পানি খাইয়ে অনশন ভাঙ্গিয়ে দিল-মহিউদ্দিন।
৩৭। বঙ্গবন্ধুর সাথে তার বাবা দেখা করতে এসেছেন -২৮ তারিখ সকাল ১০টায়।
৩৮। মহিউদ্দিন আহমদকেও মুক্তি দেয়া হবে একথা বঙ্গবন্ধুকে জানালেন – তার বাবা।
৩৯। মহিউদ্দিনকেও মুক্তি দেয়া হবে- বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়ার ১ দিনপর।
৪০। বঙ্গবন্ধুকে জেল থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে আসলেন- তার বাবা।
৪১। বঙ্গবন্ধুকে জেলে গেটে নিয়ে যাওয়া হয় – স্ট্রেচারে করে।
৪২। মুক্তির অর্ডার পাবার পরে বঙ্গবন্ধু বাড়ি পৌঁছালো- ৫ দিন পর।
৪৩। বঙ্গবন্ধু বাসায় যাওয়ার পর তার গলা জড়িয়ে ধরল-হাচু (হাসিনা)
৪৪। রেণু কেঁদে ফেলল – সবাই যখন শেষ মুজিবের সাথে দেখা করে কামরা থেকে বিদায় নিল তখন।
৪৫। প্রকাশ্যে বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না- কোন কোন মাওলানা সাহেবরা যারা বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছিলেন।
৪৬। খয়রাত হোসেন মুসলিম লীগ ত্যাগ করেন- পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর খাজা নাজিমুদ্দীন সরকারের গণবিরোধী নীতির প্রতিবাদে ১৯৪৮ এ।
৪৭। ভাষা আন্দোলনকালীন সময়ে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের বিশিষ্ট নেতা ছিলেন – খান সাহেব ওসমান আলী।
৪৮। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের তৎকালীন সংগঠক ছিলেন – খোন্দকার মোশতাক আহমেদ।
৪৯। ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র, গোপন সমর্থন ও সহায়তার জন্য নিন্দিত – খোন্দকার মোশতাক আহমেদ।
৫০। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ ভ্রাতার নাম – শেখ নাসের।
৫১। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনাটি সংকলিত হয়েছে- বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী (২০১২) থেকে।
৫২। বঙ্গবন্ধু তার আত্মজীবনী লেখা শুরু করেন – ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে রাজবন্দি থাকার সময়।
৫৩। বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা সেনানিবাসে আটক রাখা হয় – ১৯৬৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি থেকে।
৫৪। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটিতে স্থান পেয়েছে – ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলি।
৫৫। ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ রচনায় বর্ণিত হয়েছে- বঙ্গবন্ধুর জেলজীবন ও জেল থেকে মুক্তি লাভের স্মৃতি।

নং বিষয় লেখক
আমার পথ কাজী নজরুল ইসলাম
বিড়াল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
চাষার দুক্ষু বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত
সাম্যবাদী কাজী নজরুল ইসলাম
ঐকতান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ মাইকেল মধূসুদন দত্ত

অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর:
১। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বছরের পর বছর জেল খাটতে হয়েছিল কেন?
উত্তর : পাকিস্তান সরকারের অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সর্বদা প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বছরের পর বছর জেল খাটতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক প্রতিবাদী সত্তা। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অধিকার হরণ করতে নানাভাবে শোষণ ও অত্যাচার চালাত। শাসকগোষ্ঠীর এমন শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এক প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। বাঙালির অধিকার রক্ষায় তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট। এ কারণেই তাঁকে বছরের পর বছর জেল খাটতে হয়েছিল।

২। শেখ মুজিবের আব্বার চোখে পানি এসেছিল কেন?
উত্তর : শেখ মুজিবের করুণ অবস্থা দেখে তাঁর আব্বার চোখে পানি এসেছিল। অনশন শুরু করার পর থেমে মুজিব ও মহিউদ্দিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি নড়াচড়া করার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। দিনের পর দিন জেলের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে না খেয়ে থাকতে থাকতে শেখ মুজিবের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, তাঁকে দেখে তাঁর আব্বার চোখে পানি এসে যায়।

৩। জেলখানায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কেন?
উত্তর : জেলখানায় অনশনট ধর্মঘট পালন করার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ঘৃণ্য পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিনকে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন জেলখানায় আটকে রাখে। এভাবে আটক রাখার প্রতিবাদে অনশন ধর্মঘট পালন করেন তাঁরা। অনশনকালে কিছুদিনের মধ্যে তাঁরা দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুতরাং বলা যায়, অনশন ধর্মঘট পালন করার কারণেই জেলখানায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

৪। অনশনকারীদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল কেন?
উত্তর:শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় অনশনকারীদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমদ রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে অনশন ধর্মঘট পালন করছিলেন। তাঁরা ফরিদপুর জেলে বন্দি অবস্থায় দুই দিন অনশন করেন। দুই দিন পর তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ কারণে জেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।

৫। “তাদের জন্য জীবন দিতে পারলাম, এই শান্ত।”- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজবন্দিদের মুক্ত করার লক্ষ্যে নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়াকে শান্তির কাজমনে করে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অপশাসন ও বিনাবিচারে বছরের পর বছর রাজবন্দিদের কারাগারে আটক রাখার প্রতিবাদে ১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবু রহমানে অনশন ধর্মঘট শুরু করেন। তাঁর মতে, রাজবন্দিদের মুক্ত করতে অনশন ধর্মঘট করে জীবন দিতে পারাই শান্তির কাজ।

৬। ‘মাতৃভাষা আন্দোলনে পৃথিবীতে এই প্রথম বাঙালিরাই রক্ত দিল।’- উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : “মাতৃভাষা আন্দোলনে পৃথিবীতে এই প্রথম বাঙালিরাআ রক্ত দিল।”- উক্তিটি দ্বারা মাতৃভাষার জন্য বাঙালি জাতির রক্তদানের বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকারের জন্য কোন জাতিকে রক্ত দিতে হয়নি। বাঙালিরাই প্রথম সেই কাজটি করে। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী এদেশের মানুষের মাতৃভাষা বাংলাকে কেড়ে নেওয়ার জঘন্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে এদেশের ছাত্র-জনতা রাজপথে মিছিল বের করেন। শাসকগোষ্ঠীর হুকুমে পুলিশ সেই মিছিলে গুলি চালিয়ে অনেককেই হত্যা করে। এ খবর শুনে ফরিদপুরের জেলখানায় বন্দি অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ কথা বলেন।

৭। ফরিদপুর জেলে রওয়ানা হতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেরী করলেন কেন?
উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সহবন্দি মহিজউদ্দীন আহমদকে ঢাকা জেল থেকে ফরিদপুর সেন্ট্রাল জেলে পাঠানোর বিষয়টি তাঁর দলের নেতাকর্মীদের জানানোর জন্য তিনি দেরি করলেন। তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সহবন্দি মহিউদ্দিন আহমদকে হঠাৎ গোপনীয়তার সাথে ঢাকা জেল থেকে ফরিদপুর জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রওয়ানা হতে দেরি করতে লাগলেন। কারণ নারায়ণগঞ্জ থেকে বেলা ১১টার জাহাজে ওঠা ওড়াতে পারলে রাত ১টায় পরবর্তী জাহাজ। এর মধ্যে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে তাঁর ঢাকা থেকে ফরিদপুর যাওয়ার খবরটি পৌঁছে দিতে পারবেন।

৮। জেল থেকে মুক্তির সংবাদটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কীভাবে পেলেন?
উত্তর : ডেপুটি জেলারের মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জেল থেকে তাঁর মুক্তির সংবাদটি পেলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে ডেপুটি জেলার বললেন, “আমি পড়ে শোনাই, আপনার মুক্তির অর্ডার এসে গেছে রেডিওগ্রামে এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের অফিস থেকেও অর্ডার এসেছে। দুইটা অর্ডার পেয়েছি।” ডেপুটি জেলার সাহেব পড়ে শোনালেন। তিনি সেসব কথা শুনে বিশ্বাস করতে চাইলেন না। তখন তাঁর সহবন্দি মহিউদ্দিন আহমদ অর্ডাটা দেখে তাঁকে নিশ্চিত করলেন যে, তাঁর মুক্তির আদেশ সত্যিই এসেছে।

৯। ‘নিজের ছেলেও অনেকদিন না দেখলে ভুলে যায়।’- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : দীর্ঘদিন পর শেখ মুজিবকে দেখে শেখ কামাল চিনতে না পারার কারণেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করা হয়েছে। শেখ কামালের বয়স যখন মাত্র কয়েক মাস তখন শেখ মুজিব জেলে গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন পরে জেল থেকে ফিরে এলে শেখ কামাল তাঁকে চিনতে পারেন না। কামাল মনে করেছিলেন যে, শেখ মুজিব হচ্ছেন শুধু হাসিনার বাবা। অর্থাৎ দীর্ঘদিন না দেখার কারণে ছেলে তার বাবাকে ভুলে গিয়েছিল বলেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করা হয়েছে।

১০। বঙ্গবন্ধু কেন অনশন না ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : অন্যায়ভাবে শাসকরা বঙ্গবন্ধুকে জেলে আটকে রেখেছিল বলে তিনি অনশন না ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রাক্কালে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বহু নেতাকে বিনা বিচারে জেলে আটক করে রাখে। তাঁদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সহযোদ্ধা মহিউদ্দিনও ছিলেন। তাঁরা দুজনই অনশন করেছিলেন সরকার বিনা বিচারে আটকে রেখে যে অন্যায় করেছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্যে। তাই তাঁরা অনশন না ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

উদ্দীপকের বিষয় :
 রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন।
 অধিকার আদায়ে আত্মত্যাগ।
 ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান।
 বাঙালির গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য রক্তাক্ত সংগ্রাম।
 শোষণ-শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
 ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পরিবেশ।
 দেশের মর্যাদা রক্ষায় অকুতোভয় দেশপ্রেমিকের ভূমিকা।
 স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গের প্রতিজ্ঞা।
 বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তরুণদের প্রতিবাদ।

ব্যাকরণ অভীক্ষা:

⇒ বিদেশি শব্দ: সুবেদার (ফারসি), জমাদার (ফারসি), কিসমত (আরবি), সিপাই (ফারসি), খবর (আরবি), হরতাল (গুজরাট), মালিশ (ফারসি), দুনিয়া (ফারসি), ওজু (আরবি), খোদা (ফারসি)।
⇒ মাস : ফেব্রুয়ারি।
⇒ উপসর্গ সাধিত শব্দ : বিশেষ, প্রতিবাদ, অন্যায়, বিছানা, সমস্ত, অসুবিধা, উৎকণ্ঠা
⇒ সন্ধিগঠিত শব্দ নির্দেশ: অত্যাচার=অতি+আচার
⇒ব্যাস বাক্যসহ সমাস নির্ণয়: প্রদত্ত শব্দ ব্যাসবাক্য সমাসের নাম
ধর্মঘট ধর্ম রক্ষার্থে ঘট মধ্যপদলোপী কর্মধারায়
হিসাব নিকাশ হিসাব ও নিকাশ দ্বন্দ্ব
মালপত্র মাল ও পত্র দ্বন্দ্ব
কাপড় চোপড় কাপড় ও চোপড় দ্বন্দ্ব
শোভাযাত্রা শোভার জন্য যাত্রা ৪র্থী তৎপুরুষ
হাটবাজার হাট ও বাজার দ্বন্দ্ব
অনশন নয় অশন নঞ তৎপুরুষ

নং বিষয় লেখক
আমার পথ কাজী নজরুল ইসলাম
বিড়াল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
চাষার দুক্ষু বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত
সাম্যবাদী কাজী নজরুল ইসলাম
ঐকতান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ মাইকেল মধূসুদন দত্ত

 

See More

Like Our Facebook Page.

Spread the love
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments